Beanibazarer Alo

  সিলেট     সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কানাইঘাটে জয়ের মালা কার গলায়?

admin

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪ | ১২:২৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ | ১২:২৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
কানাইঘাটে জয়ের মালা কার গলায়?

Manual7 Ad Code

কানাইঘাট সংবাদদাতা:
কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার( ৫জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। বৈরি আবহাওয়া ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে ভোট হবে কিনা, এ নিয়ে জনমনে ছিলো নানা সংশয়।

কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে অবশেষে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।

উপজেলার মোট ৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি কেন্দ্রে বানের পানি থাকায় বিকল্প ৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। বিকল্প কেন্দ্রগুলো হলো, ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বাজেখেল কমিউনিটি স্কুলের পরিবর্তে মুলাগুল উচ্চ বিদ্যালয়, ৩নং দিঘীরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের ১৯-২০নং ২টি ভোট কেন্দ্র ফরিদ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তে সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ও শাহ ইবরাহিম তশ্না বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

Manual3 Ad Code

নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন গত সোমবার(৩ জুন) ভোটের লড়াইয়ে থাকা চেয়ারম্যান পদে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এ.কে.এম শামসুজ্জামান বাহার, সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ,সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব (প্রতিমন্ত্রী) আবুল হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই আবুল মনসুর সাজু চৌধুরী, ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বেলাল আহমেদ, খায়রুল আমিন ও এনামুল হক তাদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন।

Manual4 Ad Code

অপরদিকে প্রশাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা খায়ের চৌধুরী।

নির্বাচনী এলাকার নানা শ্রেণি পেশার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে নির্বাচনী জরীপে চেয়ারম্যান পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য শামসুজ্জামান বাহারের ঘোড়া মার্কা ও সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশের মোটরসাইকেল মার্কার মধ্যে। এমন আবাস উপজেলা ঘুরে পাওয়া গেছে। এ দু’প্রার্থীর মধ্যে ভোটকেন্দ্রে যে প্রার্থী বেশি ভোটারদের নিয়ে আসতে পারবেন বিজয়ের পাল্লা তার দিকে ভারী হবে।

এছাড়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমর্থকদের ভোট বড় ফেক্টর হবে। যদিও দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী ঘরানার লোকেরা। তবে কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোপনে সক্রিয় হয়ে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বিএনপি ও জামায়াতের অনেক সমর্থক।

ঘোড়া ও মোটরসাইকেল মার্কার প্রার্থী বিএনপি-জামায়াতের ভোট নিজেদের পক্ষে আনার জন্য নানা ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

শামসুজ্জামান বাহার যুক্তরাজ্য প্রবাসী, সেখানকার কমিউনিটি নেতা। ব্যক্তিগতভাবে একজন সৎ নিষ্ঠাবান ব্যক্তিত্ব ও ক্লিন ইমেজের হওয়ায় দলের বাহিরেও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা তাকে পছন্দ করে থাকেন। এছাড়াও বাহারের পিতা ছিলেন কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান এম.এ.রকিব। বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতাদের সাথে তার পারিবারিক ও আত্মীয় সম্পর্ক রয়েছে। আত্মীয়তা কাজে লাগিয়ে ভোট তার পক্ষে আনার চেষ্টা করছেন তিনি। বাহারের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে।

অপরদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মস্তাক আহমদ পলাশ। সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পর্ষদের দুইবারের নির্বাচিত সদস্য। সাতবাক ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন পলাশ। দীর্ঘদিন থেকে তিনি তার এলাকার মানুষের সুখে, দুখে মাঠে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াতের ভোট আদায়ে তিনিও মরিয়া হয়ে মাঠে ছিলেন। এ জোটের ভোট তার পক্ষে আনার জন্য নির্বাচনী সবধরনের কৌশল গ্রহণ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে তার বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় বিভিন্ন দলের অনেক দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে পলাশ কে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে বাহার এবং পলাশের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। যার কারণে সব মিলিয়ে শামসুজ্জামান বাহার ও মস্তাক আহমদ পলাশের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াই হবে। যে প্রার্থী ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি করবেন এবং বিএনপি জামায়াত জোটের ভোট বেশি পাবেন বিজয়ের ধারপ্রান্তে পৌছে যাবেন, নির্বাচনী এলাকায় এমন সমীকরণ পাওয়া গেছে।

Manual1 Ad Code

ভাইস চেয়ারম্যান পদে জমিয়ত নেতা হাফিজ মাওলানা আলতাফ হোসেনের তালা মার্কা, খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা খালেদ আহমদের চশমা মার্কা ও কাউন্সিলর জসিম উদ্দিনের মাইক মার্কার মধ্যে তৃতীয় মুখী লড়াই হবে।

Manual1 Ad Code

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খাদিজা বেগমের ফুটবল মার্কা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রোকশানা জাহানের পদ্মফুল মার্কায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

উল্লেখ্য, এবারের কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

উপজেলায় মোট ভোটার ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৯০৯ জন, এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ১২ হাজার ১২৫জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৬ হাজার ৭৮৪ জন।

শেয়ার করুন