কালোবাজারিরা যাতে সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে
১৬ মার্চ ২০২৩, ০১:০৯ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
রোজায় কালোবাজারিরা যাতে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রমজান মাসে অনেকে পণ্যের দাম বাড়াতে চেষ্টা করেন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রমজান মাস হলো কৃচ্ছতা সাধনের সময়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশালের আগৈলঝাড়া, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। এসময় তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক সচিব কাজী এনামুল হাসান (এনডিসি)।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদে জুমার খুতবার সময় আপনারা (ইমাম) কালোবাজারি, মজুতদারি বা খাদ্যে ভেজাল দেওয়া যে গর্হিত কাজ, এব্যাপারে মানুষকে আরো সচেতন করবেন।
নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আমরা বিশেষ কার্ড করে দিয়েছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বেশি দামে চাল ক্রয় করে মাত্র ৩০ টাকা কেজি দরে আমরা তাদের দিচ্ছি। রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা আরও ১ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করব। সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায়; চাল, তেল, চিনি, ডাল, যা যা দরকার সেগুলো যাতে ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে সেজন্য টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূলের কার্ড দিয়ে আমরা এই সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ যেভাবে অর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেভাবে এগিয়ে যাক। সেই সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা এবং ধর্ম পালন করা হউক সেজন্য এই মসজিদগুলো করে দিচ্ছি। ইসলাম সবসময় মানুষকে শিক্ষাগ্রহণ করতে বলেছে, সেই বিষয়টা আমাদের মনে রাখতে হবে।
জনগণের কাছে দোয়া চেয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজটা যেন আমরা আরো ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা বিনামূল্যে সবাইকে ঘর-বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আমরা কৃষিতে প্রচুর ভর্তুকি দিচ্ছি, আমরা শ্রমিকদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বিদেশে যারা কাজ করতে যায় তারা যাতে জমি বিক্রি না করে, ব্যাংক থেকে সহজ ঋণ নিয়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে শেষে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরবে, সেটা আমরা চাই না।
তিনি বলেন, কোনো কোনো দেশে দেখি নারীদের শিক্ষা নিতে দেবে না। ইসলাম কিন্তু সেটা বলেনি। আমাদের সবাইকে শিক্ষাগ্রহণ করতে বলেছে। একমাত্র ধর্মই নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে। সেই কথাটা সবাইকে স্মরণ রাখা দরকার বলে আমি মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, জীবন দেওয়ার মালিকও তিনি, নেওয়ার মালিকও তিনি। আমার বাবা, মা, ভাই, বোন সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। বিদেশে ছিলাম বলে আমরা দুই বোন বেঁচে গেছি। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর কতবার আমি গুলির সামনে, কখনো বোমা পাতা, কখনো গ্রেনেড হামলা, নানাভাবে আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই আমাকে রক্ষা করেছেন। কারণ আল্লাহ সবসময় মানুষকে কিছু সময় দেন। কিছু কাজ দেন। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, সেই কাজগুলো সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমাকে রক্ষা করবেন। সেই বিশ্বাস নিয়ে আমি বাংলাদেশে এসেছিলাম, যে বাংলাদেশে আমার বাবা-মা, ভাইদের হত্যা করেছে, লাশ ফেলে রেখেছিল। কাফন-দাফনও করতে দেয়নি।
ধর্মের নামে বিচারের অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামকে নিয়ে কেউ যেন বাড়াবাড়ি করতে না পারে, সে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যারা সত্যিকারের ইসলামকে বিশ্বাস করে তাদের অন্য ধর্মের প্রতিও সহনশীল হতে হবে। আমাদের বাংলাদেশে আমরা চাই সব ধর্মের সমান অধিকার। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। শেষ বিচার তো আল্লাহ করবেন, বিচারের ভার আল্লাহর।