ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে বললেন তামিম

Daily Ajker Sylhet

admin

০৪ নভে ২০২৩, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ


ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে বললেন তামিম

স্টাফ রিপোর্টার:
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করা হয়। তার পর আর জাতীয় দলের অধিনায়ক থেকে বাদপড়া তামিম ইকবাল খান দেশের কোথাও নিজ থেকে কথা বলেননি। মাঝে একবার ভিডিও বার্তায় দুই লাইন কথা বললেও সরাসরি অতিথিদের সামনে কথা বলা হয়নি তামিমের।

বিশ্বকাপে ক্রিকেটে খেলতে গেল বাংলাদেশ। কত ঘটনা ঘটে গেল। কিন্তু প্রকাশ্যে তামিম কোনো কথা বলেননি। ২২ গজের লড়াইয়ে নেমে সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ প্রতি ম্যাচে নাজেহাল হয়েছে। প্রথম ম্যাচ জয়ের পর টানা ৬ ম্যাচ হেরেছে সাকিবরা। দেশের ক্রিকেটের এমন চিত্র দেখেও তামিম ইকবাল কথা বলেননি। সাকিব, কোচ হাথুরুসিংহে, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে নিয়ে ক্রিকেট ভক্তরা ট্রল করছে। হাস্যরসে পরিণত করেছে। কৌতুক করে ভিডিও বানানো হচ্ছে।

প্রযুক্তির দুনিয়ায় তামিমের বসবাস। তামিম হয়তো সবই দেখেছেন, সবই জেনেছেন। ব্যথা অনুভব করেছেন, কিন্তু চাপা কষ্ট বুকেই রেখেছিলেন, কথা বলেননি। অবশেষে তামিম কথা বলেছেন। একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে এক-দুইটা কথা বলেছেন। ক্রিকেটের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা যার, সেই মানুষটি বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া ১৫ ক্রিকেটারের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তামিম ইকবালের সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু তামিম তার আগের অবস্থানে রয়েছেন। কোনো কথা বলতে রাজি না। খেলা দেখেন কি না, কীভাবে সময় কাটছে। পরিবার নিয়েই সময় যাচ্ছে কি না—এসব কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তামিম বললেন, ‘আমি কোনো কথা বলতে চাই না। অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, ওখানেই যা কথা হয়েছে।’

বাংলাদেশের ক্রিকেট যাচ্ছেতাই অবস্থায় গেছে। দুপুরে অনুষ্ঠানে তামিম বলছেন, ‘একটা কঠিন সময়ে যাচ্ছি আমরা। দেশবাসী হতাশ। আমাদের উচিত তাদেরকে (ক্রিকেটারদের) সমর্থন করা।’ ইনজুরি থাকার পরও তামিম বিশ্বকাপে খেলবেন বলে নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন। ইনজুরি নিয়ে বলেছিলেন একটু অস্বস্তি আছে। তারপরও তামিম মনের জোরটা রেখেছিলেন। দেশের জন্য জীবন দিয়ে খেলবেন। প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। কিন্তু তামিমকে ষড়যন্ত্র করে বাদ দেওয়া হয়। দেশের মানুষ তামিমকে বিশ্বকাপে না দেখে হতাশ।

ক্রিকেট দুনিয়ার বিশেষজ্ঞরাও হতাশ হয়েছেন তামিম দলে নেই দেখে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে তামিম সম্পর্কে সাক্ষাত্কার দিয়ে সাকিব জানিয়েছিলেন তামিম কেন দলে নেই। এর পরও তামিম একটা কথারও প্রতিবাদ করেননি। নিজেকে আড়াল করে নিয়েছেন। এত সমালোচনার পরও তামিম বিশ্বকাপের ১৫ ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়ালেন।

সমালোচনা না করে ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ তামিমের। তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা ক্রিকেট নিয়ে এত ইমোশনাল, যখন ভালো হয় না তখন মনে হয় দুনিয়া শেষ হয়ে গেল। আর যখন ভালো হয় তখন মনে হয় আমরা সব জয় করে নিয়েছি। এখন কঠিন সময়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষ হতাশ। একটু চিন্তা করেন যে, ১৫টা ছেলে ওখানে খেলছে। কী চাপটা যাচ্ছে। তাদের পরিবার আছে। তাদের ওপরও কীভাবে প্রভাব পড়ছে। বুঝতে হবে, দিন শেষে ওরাও রক্তে মাংশের মানুষ।’ শত শত অতিথি উপস্থিত হলরুমে পিনপতন নীরবতা।

সবার অপলক চোখ মঞ্চে, তামিমের চোখে। কী বলছেন তামিম, তার কণেণ্ঠ ঝরে পড়া কথাগুলো যেন আগ্রহভরে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছিলেন সবাই। তামিমের একেকটা কথায় অনুষ্ঠানের অতিথিরা করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। হাততালি থামলে মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়ানো তামিম আবার বললেন, ‘আমি খেলছি কি খেলছি না, এখানে বাংলাদেশ খেলছে। আমাদের প্রয়োজন তাদেরকে সমর্থন করা।’ সবাই হাততালি দিল। তামিম বললেন, ‘আমরা আমাদের দেশ থেকে তাদেরকে (ক্রিকেটার) ভালোবাসা দেবো এবং তাদের পরিবারের প্রতিও ভালোবাসা দেবো।’

যেদিন বাংলাদেশ দল ভারতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ে তখন তামিম ইকবাল একটি ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, ‘আমাকে মনে রাইখেন। ভুলে যেয়েন না।’ গতকালও সেই একই রকম কথা বললেন তামিম, ‘জানিনা খেলব কি খেলব না। যদি খেলি মাঠে দেখা হবে।’ তামিমের শেষ কথা শুনে অতিথিরাও যেন বলে গেলেন এটাই হচ্ছে তামিম ইকবাল খান।

Sharing is caring!