ছেলের প্রাণ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন আরিফের মা

Daily Ajker Sylhet

admin

২১ নভে ২০২৩, ০৫:১৫ অপরাহ্ণ


ছেলের প্রাণ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন আরিফের মা

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদ (১৯)। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। রাজনীতিতে জড়ানোর পর পরই দেখা দেয় আরিফের প্রতিপক্ষ। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে ঘায়েল করার জন্য নিজ দলেরই নেতাকর্মীরা নেন পরিকল্পনা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর শাহপরাণ থানাধীন উত্তর বালুচর এলাকায় রাতে তার উপর হামলা করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। এ সময় তাকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়েও আঘাত করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় হাসপাতালে। গত রবিবার (১৯ নভেম্বর) সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় আরিফের মা আঁখি বেগম ছয় জনের নামে মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় অভিযোগ দেন। থানায় করা অভিযোগে যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- বালুচর এলাকার জুনেদ, আনাছ মিয়া, কুদরত আলী, কালা মামুন, শরীফ, হেলাল ও সবুজ মিয়া।

অভিযোগে আরিফের মা উল্লেখ করেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ নভেম্বর রাতে বালুচর এলাকার ২নং মসজিদের সামনে আমার ছেলে আরিফ আহমদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মারধরের পাশাপাশি তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়েও আঘাত করে। আসামি আনাছ মিয়ার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার ছেলের একটি আঙুল কেটে পড়ে যায়। এ সময় আনাছ মিয়া, কুদরত আলী ও জুনেদ আমার ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে। এ ছাড়া আসামি শরীফ আমার ছেলেকে ধরে রাখলে সবুজ ও হেলাল বেধড়ক মারধর করা শুরু করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

জানা যায়, নিহত আরিফ মিয়া নগরীর শাহীঈদগাহ টিভি গেইট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। সে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিল বলে জানা গেছে। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে টিভিগেইট এলাকায় আবারো প্রতিপক্ষ গ্রুপের কর্মীরা আরিফের উপর হামলা চালায়।

তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায় আরিফকে। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। আইসিইউতে ভর্তির পর রাত দেড়টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার বাম হাত, উরু ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের ২৩টি আঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।

আরিফের মা আখি বেগম জানান, আমার ছেলেকে যারা প্রথমে মারপিঠ করেছিলো হত্যা করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার পাইনি। ন্যায় বিচার যদি পেতাম তাহলে আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হতো না।

সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মঈন উদ্দিন সিপন জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। নিহত আরিফের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

Sharing is caring!