জাবিতে স্বামীকে হলের কক্ষে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ

Daily Ajker Sylhet

admin

০৪ ফেব্রু ২০২৪, ১২:০২ অপরাহ্ণ


জাবিতে স্বামীকে হলের কক্ষে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও বহিরাগত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত যুবক মামুন (৪৫)। তাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক‌ এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী। ঘটনার পর থেকে মোস্তাফিজুর ও মামুন পলাতক রয়েছেন।

জানা যায়, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন মামুন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর আটককৃতের স্ত্রীকে ফোন করে তার নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। মামুনের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ভেতরের ওই কক্ষে রেখে আসেন। এরপর ‘তার স্বামী ওইদিকে আছে’ বলে ওই গৃহবধূকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, মামুন ভাই আমাদের বাসায় ভাড়া থাকতো। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে ফোন দিয়ে আমাকে তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। আমি তার জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন তিনি আমাদের বাসায় থাকবেন না বলে জানান। এছাড়া তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের মোস্তাফিজুর ভাইয়ের কাছে থাকবে বলেও জানান।

তিনি আরও বলেন, এরপর মামুন আমার কাছ থেকে তার জিনিসপত্রগুলো নিয়ে হলে রেখে আসে। পরে আমার স্বামী ওদিকে আছে বলে আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায়। তার সঙ্গে মোস্তাফিজুর ভাইও ছিল। তখন তারা আমাকে ধর্ষণ করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুরের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, আমরা রাষ্ট্রীয় আইনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করব।’

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাসিক বলেন, ‘ভুক্তভোগী থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Sharing is caring!