Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগুনে পোড়া ভবনে মানুষের আতঙ্কভরা চোখ

admin

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪ | ০৪:১২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ | ০৪:১২ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
আগুনে পোড়া ভবনে মানুষের আতঙ্কভরা চোখ

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ দুদিন আগেও মানুষের পদচারণায় ছিল মুখর। মুখরোচক খাবার আর হাসি-আড্ডায় সময় কাটত সেখানে। তবে বৃহস্পতিবারের আগুন বদলে দিয়েছে সব। ভবনজুড়ে এখন শুধু স্তব্ধতা। আগুনে পোড়ার চিহ্ন নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটির অবশিষ্ট অংশে এখন আর কোনো প্রাণ নেই। ভবনজুড়ে এখনও যেন ভেসে বেড়াচ্ছে আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে চাওয়া মানুষগুলোর আর্তনাদ।

শনিবার বেইলি রোডে গিয়ে দেখা যায়— পুড়ে যাওয়া ভবনটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতি মানুষকে জানাতে সেখানে ভিড় জমিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। ভিড় জমিয়েছেন শতশত উৎসুক জনতাও। সবার আতঙ্কভরা চোখে আর্তনাদ স্পষ্ট। কারোর কণ্ঠস্বর কেঁপে উঠছিল ঘটনার কথা মনে করতেই।

Manual8 Ad Code

ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী হাসিবুল আলম ইভান কোচিং শেষে পুড়ে যাওয়া ভবনটি দেখতে এসেছেন।

Manual4 Ad Code

জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগে এই ভবনে ফ্যামিলিসহ অনেকবার এসেছিলাম। আগুনে পুড়ে যাওয়া এই ভবন দেখে এখন আতঙ্ক লাগছে। এর আগে যখন এখানে এসেছিলাম, বহুবার দেখেছি সিলিন্ডারগুলো অসতর্কভাবে রাখা ছিল। সচেতনতা অবলম্বন করলে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।

আমিন আলমগীর নামের একজন পথচারী বলেন, আমি প্রতিদিন এই ভবনের সামনে দিয়েই যাই। পুড়ে যাওয়ার পর ভবনটি দেখে ভয় লাগছে।

গ্রিন কোজি কটেজের পাশের ভবন গোল্ড প্যালেস। এই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মো. মোস্তফা বলেন, এখানে (গ্রিন কোজি কটেজ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক মানুষ দেখতাম। কারণ খাবারের দোকান, মানুষ খাবার খেতে আসতো, খাবার নিয়েও যেতো।

গ্রিন কোজি কটেজ ভবনটি বেইলি রোডের অন্যতম জমজমাট ভবন। সাততলা ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। ফলে সারাদিনই সেখানে মানুষের যাতায়াত ছিল। তবে সন্ধ্যার পর মানুষের উপস্থিতি থাকত বেশি। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ভিড় বেশি ছিল।

ভবনের প্রথম তলায় চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়া ছিল গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ার, স্যামসাং, শেক হোলিক ও ওয়াফে বে। দ্বিতীয় তলার পুরোটা জুড়ে ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। তৃতীয় তলায় ইলিয়ানের শোরুম। চতুর্থ তলায় খানাস নামে একটি রেস্টুরেন্ট, পঞ্চম তলায় পিৎজা হাট, ষষ্ঠ তলায় স্ট্রিট ওভেন ও জেস্টি নামে দুটি রেস্টুরেন্ট এবং সপ্তম তলায় ফোকুস ও হাক্কা ঢাকা নামে দুটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়া ভবনটির ছাদেও অ্যামব্রোসিয়া নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল।

Manual1 Ad Code

ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভবনটিতে দুটি লিফট ও একটি সরু সিঁড়ি ছিল। তবে জরুরি ফায়ার এক্সিট ছিল না। ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা ও লোকজন বের হওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র ও ভবনটির রেস্টুরেন্টগুলোতে বিভিন্ন সময়ে খেতে যাওয়া অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটিতে প্রবেশ করার রাস্তা ছিল মাত্র একটি। সেটি নিচ তলার চায়ের চুমুক নামে একটি রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে। নিচ তলায় রয়েছে দুটি লিফট ও একটি সরু সিঁড়ি। আর সিঁড়িটি এত সরু যে সেখান দিয়ে চারজন লোক একসঙ্গে উঠানামা করা যায় না। উপর থেকে একজন এবং নিচ থেকে একজন করে ওঠা-নামা করা যায়।

Manual2 Ad Code

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী আগুনের সূত্রপাত চায়ের চুমুক থেকে। পরে পুরো ভবনে তা ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচ তলায় এই রেস্টুরেন্টটি যাত্রা শুরু করে।

শেয়ার করুন