আড়াইহাজারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে বখাটেদের উৎপাত
১৩ জুলা ২০২৪, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
উপজেলার গোপালদী পৌরসভার গোপালদী বাজারের কলেজ গলিতে বখাটেদের উত্পাত বেড়েছে। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছে। বখাটেদের উত্ত্যক্তের কারণে অনেক ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হতে চলেছে। দূরদূরান্ত থেকে কলেজে কিংবা মাদ্রাসায় আসা শিক্ষার্থীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। উপজেলায় এই কলেজ গলিটি এখন বখাটেদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। স্থানীয় লোকজন বখাটেদের ভয়ে কিছু বলতে পারে না। বখাটেরা মোটরসাইকেলে চড়ে দল বেঁধে আসে। কলেজ গলিতে আড্ডা দেয়। রাজনৈতিক সূত্র থাকায় তাদের কেউ ঘাঁটাতে চায় না। জানা গেছে, গোপালদী বাজারের এ কলেজ গলিতে রয়েছে গোপালদী নজরুল ইসলাম বাবু কলেজ, সদাসদী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালদী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও গোপালদী ডিগ্রি মাদ্রাসা, আদর্শ বিদ্যানিকেতন ও সাকসেস স্কুল। বখাটেরা এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে উলটো তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই বখাটেদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, স্কুল ও মাদ্রাসা চলাকালীন স্থানীয় বখাটেরা তো বটেই, অনেক দূর থেকেও বখাটেরা এখানে আড্ডা দিতে আসে। মাঝে মধ্যে গোপালদী ফাঁড়ি পুলিশ টহলে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ চলে যেতেই তারা আবারও স্কুল গলিতে এসে আড্ডা দেয়। ফলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। এই পরিস্থিতিতে উত্কণ্ঠায় থাকা অভিভাবকদের মধ্যে রামচন্দ্রদী এলাকার রোকেয়া, গাজীপুরা এলাকার মহসীন মোল্লাসহ অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে প্রশাসনের নজরদারির জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে গোপালদী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকুর রহমান কামালসহ গোপালদীবাজার এলাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, প্রতিনিয়তই বখাটেদের দ্বারা ছাত্রীরা উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে। এতে বেশির ভাগই আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে নীরবে সহ্য করছে এবং বখাটেদের অভিভাবকদের ডেকে সমঝোতা করা হয়। যারা একেবারে বেপরোয়া তাদের জন্য কালেভদ্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। নারী শিক্ষাকে নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজরদারি অবশ্যই বৃদ্ধি করতে হবে। গোপালদী বণিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, এটা খুবই লজ্জার ব্যাপার। বখাটের উত্পাতে এলাকার মেয়েরা ঠিকমতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। এ বিষয়ে প্রতিকারের বিষয়ে পারিবারিক ও সামাজিক শাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো নজরদারি বাড়াতে হবে। তাছাড়া এলাকাভিত্তিক বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পায়।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আহসানউল্লাহ জানান, ‘বখাটের বিষয়ে সংবাদ পেলেই পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে লিখিত অভিযোগের অভাবে প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন বখাটেদের দেখতে পেলে ধরে সাজা দেওয়া যায়। সর্বোপরি এলাকার মানুষকে সচেতন হতে হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।