“আদর্শের লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে গেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী-ইমরান খান”

Daily Ajker Sylhet

admin

১৫ ফেব্রু ২০২৪, ০১:২৪ অপরাহ্ণ


“আদর্শের লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে গেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী-ইমরান খান”

এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন:
“’মানুষ বাঁচে কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নহে।” ইমরান খান ছিলেন ক্রিকেটার। খাদে পড়া ক্রিকেট দলকে বলিষ্ট নেতৃত্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত-এর মত শক্তিশালী দলকে পরাজিত করে পাকিস্তানি জনগনকে বিশ্ব মানচিত্রে চাঁদ তারকা পতাকা বহন করে বিশ্ব জয়ের তকমার উপাধিতে ভূষিত করলেন। পাকিস্তানি সাধারণ জনগনের আস্থার ঠিকানায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেন। বিশ্বজয় করে পাকিস্তানি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন। জনাব খান একজন চরিত্রবান ব্যক্তি ছিলেন। স্বদেশে ফিরে আসতে চাইলে বাধ সাধেন তাহার প্রথম-স্ত্রী। তিনি পাকিস্তানে আসতে চান না। ভদ্রলাক সেই স্ত্রীকে তাহার অর্জিত সম্পদ যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালীন সময়ে সম্পূর্ণ নিজ ইচ্ছায় লিখে দিলেন। সমঝোতার উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করলেন। সেই অকুন্ঠ ভালোবাসা আজও বিদ্যমান। জনাব খান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। শিক্ষার মান মর্যাদা ও চরিত্রের প্রতি ছিলেন অতি যত্নবান। ক্ষমতাসীন সরকার’ ও সেনাবাহিনী এমন কিছু করতে-বাকী রাখেননি তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে। অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, ন্যায় নীতিবান। তাহার নীতি থেকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে একাধিকবার কারান্তরিন খানের সাথে আপোষের প্রস্তাব দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু লোভনীয় কোন প্রস্তাবেই রাজী হননি। একেই বলে রাজনীতি ক্যারিসমেটিক লিডার। বিশ্বের মানচিত্রে তাহার অবস্থান সুদৃঢ় হল। আমি তাহার দৃঢ় চেতা সাহস ও নেতৃত্বকে স্বাগত জানাই। যুগে যুগে এসব সাহসী বীরদের উত্থান হবেই। ‘বীর’ পুরুষ মরে একবার কিন্তু কাপুরুষ মরে বার বার।” বাধ ভাংগা উচ্চাস, জনগনের অকুন্ট সমর্থন পেয়েছেন। তিনি নিশ্চিত তাহাকে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বাধ্যতামূলক দূরে রাখা হবে। কারণ অনেক আসনে সরকার সমর্থিত প্রার্থিরা তাহার মনোনিত প্রার্থিকে আগাম অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বুথ ফেরত ফলাফল থেকে তাহার মনোনিত প্রার্থি বিজয়ী হয়েছেন মর্মে প্রার্থিরা নিশ্চিত হয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনিক কারচুপির কারণে বিজয়ী প্রার্থিকে পরাজয় বরণ করে নিতে বাধ্য করেছেন। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ মামলা চলিতেছে। তাকে সরকার গঠনের সুযোগ না দিতে সকল অপশক্তি একত্রিত হয়ে দেশী বিদেশী আন্তর্জাতিক লবিষ্ঠ নিয়োগ করেছেন। কিন্তু দেশের জনগন ও বিশ্ব সম্প্রদায় তাহার অভুতপূর্ব বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছে।

জনগনের ভাষা হল, বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার ইমরান খান, বিশ্বজয়ী রাজনীতিবিদ। তাহাকে রাজনীতির মাঠ থেকে জেলে দিলেন মিথ্যা মামলায়। তাহার প্রতিষ্ঠিত দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এর নিবন্ধন ও প্রতিক বাতিল করলেন। হাজার হাজার শীর্ষস্থানীয় নেতা কর্মীকে জেলে বন্ধি করে রাখলেন। চাপা উত্তেজনার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখতে সিদ্ধান্ত নিলেন নির্বাচনে যাবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন দিলেন। কারচুপির নজির স্থাপন করলেন ক্ষমতাসীন দল ও সেনাবাহিনী। কিন্তু হায়? জনগনের ভালবাসা ছাড়া ক্ষমতা দিয়ে কি লাভ? নিজে নিজের লজ্জাস্থান ডেকে রাখা নিজের দায়িত্ব এবং কর্তৃব্য। উলংগ মানে পাগল হয়ে দীর্ঘ জীবন বেঁচে থাকার চেয়ে, সম্মানের সাথে কম দিন বেঁচে থাকার মধ্যে সার্থকতা আছে। “বাঘ বাঁচে, মাত্র ২৫ থেকে ত্রিশ বছর, কিন্তু হাতি বাঁচে ১০০-১৫০ বছর। কিন্তু বাঘ আর হাতি একিই শ্রেনীভূক্ত নহে। বাঘের এই স্বল্প সময় বেঁচে থাকার মধ্যে সার্থকতা আছে। কারন রাষ্ট্র তাকে জাতীয় প্রাণী হিসাবে সম্মানীত করা হয়েছে।

ইমরান খান মুসলিম জাহানের প্রতি অন্যায়ের বিরূদ্ধে প্রতিবাদের কন্ঠস্বর। ন্যায়নীত প্রতিষ্ঠার আদর্শ-ঠিকানা, সাধারণ জনগনের ভালবাসার মূর্ত-প্রতিক।“সে জন্য-তাকে স্যালুট জানাই”। স্মরন করিয়ে দিতে চাই, যে কোন অত্যাচারী, স্বৈরাচারী, ব্যাভিচারী, পথভ্রষ্ট, মিথ্যাবাদী, প্রতারক, মুনাফিক হয়ত: ভাবতে পারে সাধারণ জনগণ বোকা। কিন্তু এসব গুণ সম্পূর্ণ শাসকের পতন ও নির্বংশ হয়েছে অত্যন্ত নিষ্টুরভাবে। কারণ তাদেও পক্ষে বিপদের সময় কেহ এগিয়ে আসেনি। তাদেও অত্যাচারে জনগন অতিষ্ট ছিল। পক্ষান্তরে জনাব ইমরান খান সাধারণ জনগনের ভালবাসা পেয়ে জীবনকে ধন্য করেছেন। তা কিন্তু বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। সত্যের জয় হোক, স্বাশ্বত সুন্দরের বিজয় হোক। সাধারণ জনগন তাই-আশা করে। সাধারণ জনগনের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিটা দেশে সৎ ও ন্যায় নীতি সম্পূর্ণ উচ্ছ শিক্ষিত চরিত্রবাণ মানুষদের আইন প্রনয়নের আড্ডাখানা জাতীয় সংসদে নির্বাচিত করার সু-ব্যবস্থা করতে-ই হবে। তখন সমাজে অন্যায় অভিচার, ব্যাভিচার, ঘোষ, দুর্নিতি, কালোটাকার মালিকদের উত্থান বন্ধ হবে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে, সুবিচার।
লেখক, সভাপতি- সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।

Sharing is caring!