Beanibazarer Alo

  সিলেট     সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক শার্ট-প্যান্ট ৩৫ বছর পরেছেন ডা. জাফরুল্লাহ

admin

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ০১:১৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ০১:১৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
এক শার্ট-প্যান্ট ৩৫ বছর পরেছেন ডা. জাফরুল্লাহ

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
সাদাসিদে জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন গরিবের ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে একটা শার্ট-প্যান্ট পরেছেন। আর পায়ে দিতেন ২০০ টাকার প্লাস্টিকের স্যান্ডেল।

Manual5 Ad Code

তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘দেশের মানুষ পেট ভরে খেতে পায় না, সবাই জামা-কাপড় পরতে পারে না। আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছি মানুষের খাওয়া-পরার সমস্যা না থাকার জন্য। এখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তাই আমাকে বিলাসিতা মানায় না।’

ছাত্রজীবনে বাম ধারার রাজনীতি করলেও পরবর্তী জীবনে সক্রিয় রাজনীতি করেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তবে সবসময়ই স্বাধীন রাজনৈতিক মতামতের মাধ্যমে জনমনে প্রভাব ফেলেছিলেন তিনি।

Manual7 Ad Code

সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্যনীতি, ওষুধনীতি ও নারী শিক্ষা— এমনকি সে সময়ে সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে তার ভূমিকা আলোচনায় এসেছে সবসময়।

তার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ ও পারিবারিক বন্ধু বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন একজন বিরল ধরনের নির্মোহ মানুষ। এক অর্থে অদ্ভূত মানুষ। ঢিলেঢালা শার্ট-প্যান্ট। পুরোনা বাসায় আসবাবপত্র পুরনো। গাড়িটাও পুরনো। সব মিলিয়ে নির্মোহ একজন মানুষ। পাওয়ার কথা চিন্তা করেননি। নিজের জন্য কিছু চাননি। দেশ ও জাতির জন্য তার অবদান বলে শেষ করা যাবে না।

মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এই মহান মানুষটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিছু দিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগেও ভুগছিলেন। রাতে মোহাম্মপুরের আল মারকাজুলে গোসল শেষে লাশ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়।

জাফরুল্লাহর উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেনন। কিন্তু বরাবরই বলেছেন, ‘আমি দেশের মানুষের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। সেই আমি বিদেশে চিকিৎসা নেব, তা কী করে সম্ভব। আমি এই দেশে চিকিৎসা নিয়ে মরতে চাই।’

Manual2 Ad Code

সমাজসেবার স্বীকৃতি হিসাবে জীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন এই গুণী ব্যক্তি। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে ফিলিপাইন সরকারের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সুইডেনের বিকল্প নোবেল হিসাবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড পুরস্কার, ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ পুরস্কার এবং মানবতার সেবার জন্য ২০২১ সালে কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ২০২২ সালে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার এবং পল্লীবন্ধু পুরস্কার পান। সবশেষ গত ১৮ মার্চ সমকাল ও চ্যানেল ২৪-এর ‘দেশের যোদ্ধা বন্ধু সবার’ গুণীজন সম্মাননা লাভ করেন।

Manual5 Ad Code

 

শেয়ার করুন