কানাডা: কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম সংবর্ধিত

Daily Ajker Sylhet

admin

০৯ মে ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ণ


কানাডা: কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম সংবর্ধিত

ফুজেল আহমদ:
কানাডার ঠান্ডা আর স্নো মাড়িয়ে ছুটে চলছেন কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম। মাত্র তিন সপ্তাহের ও কম সময়ের জন্য কানাডাতে এসেছেন সিলেটের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম। সিলেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এম সি কলেজ এবং সরকারি কলেজকে কেন্দ্র করে বেড়ে উঠা ছাত্রনেতা থেকে আজ জননেতা হয়ে যাওয়া জাহাঙ্গীর আলমের কর্মক্ষেত্রের বিস্তৃতি আসলো পুরো সিলেট জুড়েই। সিলেটের ছাত্র রাজনীতির নানা মেরুকরনে রয়েছে সরব উপস্থিতি।

কানাডার অভ্যন্তরে কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে নতুন -পুরাতন এবং নবাগতদের সকলেই উল্লাসিত। এ যেন রুট লেভেলের এক পরম বন্ধু- অভিভাবককে কাছে পেয়ে সবাই খুলে দিতে চাচ্ছে স্মৃতির কপাট। মনের অলিন্দ থেকে দাবি জানাচ্ছেন যার যাহা মন চাচ্ছে তাই।

সিলেট সদর উপজেলাবাসী কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের উচ্ছ্বাস আবদার নানা দাবী নিয়ে ঘরোয়া আড্ডাটি ছিলো এক টুকরো সিলেট কিংবা কলেজ ক্যাম্পাসের ন্যায়। মনসুর আহমদের চমৎকার সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিলো আড্ডা আর মিলনমেলাময়।

প্রথমেই আমন্ত্রিত অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। সিলেট সদর এসোসিয়েশন; বড়লেখা বাসী; বিয়ানীবাজার স্পোর্টস ক্লাবের পক্ষে নিশাত;
মৌলবাজার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মুক্তা।
এভাবে একে একে গোলাপগঞ্জ ফাউন্ডেশন; কানাইঘাট অ্যাসোসিয়েশ; জকিগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন; ফেঞ্চুগঞ্জ সমিতি;এবং সিলেট ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড এর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরন করে নেন নেতৃত্ববৃন্দ।

টরেন্টো শহরের প্রিয়জন এবং সদা হাস্যজ্জ্বল পরোপকারী মনসুর আহমদের সঞ্চালনায় পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল স্মৃতিচারণ এবং আগামীর পথ চলার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ আর দিকনির্দেশনা।
টরেন্টবাসীদের পক্ষে সিনিয়র সিটিজেন জনাব মঞ্জুর হোসেন জানান -বয়সে অনেক ছোট হলেও জাহাঙ্গীর আলমের কাজকর্ম এবং মানুষের সাথে কানেক্টিভিটি দেখে তিনি ছুটে এসেছেন দেখা করতে।
নজরুল ইসলাম উনার বক্তব্য বলেন- জাহাঙ্গীর আলমের সাথে রাজনীতি করে এসেছি এবং এখানে একত্রিত হতে পেরে নিজেকে খুব গৌরবান্বিত মনে করছি।

 

বিয়ানীবাজারের কৃতি সন্তান বাংলা কমিউনিটির অন্যতম নেতৃত্বদানকারী ভোকাল মারুফ শরীফ বলেন – যেখানেই সিলেটিরা আছে আমি সেখানেই আছি। আর সংবর্ধিত কাউন্সিলরকে সিলেটে কিংবা কানাডায় যেকোন প্রয়োজনে সহযোগিতার সুযোগ পেলে ব্যক্তিগত এবং সাংগঠনিকভাবে নিজেকেই সম্মানিত বোধ করবো।
জনাব খোকন উনার বক্তব্য বলেন ছাত্র নেতা থেকে যুবনেতা; যুব নেতা হতে জননেতা হয়েছেন ।আপাদমস্তক রাজনৈতিক ফ্যামিলির সন্তান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আমাদের প্রবাসীদের জন্য এনআইডি কার্ড সহ আরো যে ব্যাপারগুলো আছে সে ব্যাপারে প্রবাসীদের জন্য সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলমের কাছে।

কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম কানাডার পিয়ারসন এয়ারপোর্টে অবতরণের পর হতে এখন পর্যন্ত উনি যেন মোজতবা আলীর “বই কেনা” প্রবন্ধের “ঝান্ডুদা” নামক সেই চরিত্র হয়ে উঠেছেন। জাহাঙ্গীর আলম এরাইভাল মুডে আছেন; নাকি ডিপারচার মুডে আছেন সেটা বুঝার সাধ্য কারো নেই।
টরেন্টোতে নেমেই বন্ধু কামনাসিসের আমন্ত্রণে ছুটে গিয়েছিলেন সাস্কাচুয়ান। সেখান থেকে ক্যালগেরী আলবার্ট্টা সহ অন্যান্য কান্ট্রি সাইট গুলো ভিজিট করে আবারো টরেন্টোতে ফিরেই নিলেন নাগরিক সংবর্ধনা।
একদিনের বিরতিতে কানাডার আরেক প্রান্ত উইনজর সিটিতে সেখান থেকে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি নায়াগ্রা ফলস ভ্রমণ করে ছুটে চলেছেন অন্য আরেকটি প্রান্তে মন্ট্রিলে।

মন্ট্রিল থেকে টরেন্টোতে ফিরেই আবার ছুটবেন দেশের উদ্দেশ্যে।
এই যে ইবনে বতুতার মত ভ্রমন পিপাষুমন – ঝান্ডুদার মত ক্লান্তিহীন ছুটে চলা; এগুলো আসলে কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমের পারিবারিক ঐতিহ্যেরই একটি অংশ।
রাজনৈতিক ফ্যামিলি থেকে উঠে আসা জাহাঙ্গীর আলমের বেড়ে উঠাই এভাবে পথ চলার মতো করে।এই পরিবারের অগ্রজরাও দেশ – দেশান্তরে এলাকায় এবং এলাকার বাইরে একইভাবে ছুটে চলেছেন যুগের পর যুগ।
জাহাঙ্গীর আলম যেন সেই ধারাবাহিকতা রক্ষার এক অগ্রসেনানী।
যে মেজরটিলা- টিলাগড় থেকে এসে টরেন্টোতে ও একই অবস্থা। এডভোকেট কামরুল ইসলামের বয়ানে – হাঁটলে মিছিল হয়ে যাচ্ছে; কথা বলতে শুরু করলে বক্তব্য।

কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমের এই ছুটে চলা শুধু ভ্রমণ পিপাসু মন-মানসিকতার পরিচয় নয় ।সেখানে রয়েছে বন্ধুদের আবদার; কমিউনিটি নেতৃত্ববৃন্দের সাথে কুশল বিনিময়ের সুযোগের সদ্ব্যবহার এবং অতি অবশ্যই সেই ক্লান্তিহীন মনমানসিকতার এক উজ্জল নজির।

সাইমন নাবিল আর মনসুরদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং এত ব্যস্ততার মাঝেও নিজেদের নিংড়ে দিয়ে যেভাবে আয়োজন করেছিলেন নাগরিক সংবর্ধনার ।

 


সেখানে সেটি হয়ে উঠেছিল এক কুশল বিনিময় আর আড্ডার আসর।প্রধান বক্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন- শত ব্যস্ততার মধ্যে ও হল ভর্তি মানুষের উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রবাস জীবনে প্রবাসীদের দুঃখ দুর্দশা সব কিছু দেখে পরামর্শ দিয়েছেন -ইন্সপায়ার করেছেন । অনেকের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। জব মার্কেট স্লো হলে ও একসময় ঘুরে দাড়াবে সেজন্য আকুলতা যেমন জানিয়েছেন তেমনি অতীতের সিলেটীদের পদাংক অনুসরন করলে একসময় সফলতা আসবেই বলে আশার বুক বাধতে বলেছেন। যারা কানাডাতে পুরাতন অবস্থায় আছেন তাদের কাছে অনুরোধ করেছেন আপনার ভাই ব্রাদারদের কে সুযোগ দিন। কোন একটি কাজে রিকোয়েস্ট করে নতুনদের সুযোগ দিন। সব বিসর্জন দিয়ে যারা এসেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানিয়েছেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনে প্রবাসীদের জন্য রয়েছে প্রবাসীর সেল।সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব আনোয়ারুজ্জামান একজন প্রবাসী এবং তিনি প্রবাসীদের ব্যাপারে খুবই সাহায্যকারী। সেজন্য যে কোন প্রয়োজনে প্রবাসীদের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য কিংবা প্রবাসীরা দেশে গেলে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে জাহাঙ্গীর আলম উনার কার্যালয়ের দ্বার খুলে দিয়েছেন সব সময়ের জন্য।


অনেক দাবির মধ্যে যারা স্টুডেন্ট হিসেবে এসেছে তাদেরও দাবি এবং নাগরিক সমাজের দাবি জাহাঙ্গীর আলমের প্রিয় প্রতিষ্ঠান সিলেট সরকারি কলেজের হোস্টেলকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। আবাসন সংকট মোকাবিলায় সিলেট সরকারি কলেজ হোস্টেল- উইমেন্স হোস্টেল সহ এই নির্মাণাধীন ভবনগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে উপকৃত হবে আমাদেরই স্বজন ভাই ভাতিজা এবং অনুজরা। সংবর্ধিত কাউন্সিলর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যথাযত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সমস্যা সমাধানের।শুভকামনা আগামীর আরো বড় মঞ্চারোহনের জন্য।

Sharing is caring!