কাশ্মীরে হামলা: ৪ সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করল ভারত
২৩ এপ্রি ২০২৫, ০৫:৪৭ অপরাহ্ণ


নিউজ ডেস্ক:
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলায় জড়িত চারজনকে শনাক্ত করার দাবি জানিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। ইতিমধ্যে চারজনের ছবি প্রকাশ করে পরিচয় জানানো হয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে- চার হামলাকারী হলেন- আদিল, আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা!
মঙ্গলবার দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নির্বিচারে গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছয় জন। সকলের মুখেই ছিল মাস্ক। হাতে একে ৪৭-এর মতো বন্দুক।
আচমকাই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এখন পর্যন্ত পহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও কয়েক জন। নিহতদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে।
পহেলগাঁও হামলায় দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির আবহে জন্ম হয় এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর।
পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যাইয়েবার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই হামলাকারীরা টিআরএফের সদস্য।
তবে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি। তিনি লশকরের অন্যতম প্রধান। এ ছাড়াও, এই গোষ্ঠীর অন্যতম মাথা তথা ভরতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা হাফিজ় সইদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত সইফুল্লা।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীর সরকার নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর জখম ব্যক্তিদের দুই লাখ এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর আহতদের এক লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানায়, প্রথমে আইইডি বিস্ফোরণের ছক করেছিল হামলাকারীরা। পরে পরিকল্পনা বদলে দু’টি দলে ভাগ হয়ে যায় তারা। অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়।
বন্দুকধারীরা সবাই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল বলেই মনে করছে ভারতের গোয়েন্দারা। দিন কয়েক আগেই ভারতে আসে তারা। এমনকি এলাকা পরিদর্শনও করে যায়।
পহেলগাঁওকাণ্ডের পরই সৌদি আরবের সফরসূচি কাঁটছাঁট করে ভারতে ফিরে এসেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার নির্দেশেই মঙ্গলবার রাতেই কাশ্মীরে পৌঁছোন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বুধবার সকালে তিনি পহেলগাঁওয়ে হামলায় নিহতদের শেষ শ্রদ্ধাও জানান। কথা বলেন তাদের পরিজনদের সঙ্গে। পাশাপাশি, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন শাহ।
অন্যদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনা ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ বা সাজানো হামলা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম আরওয়াই নিউজ।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন- এটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ বা সাজানো হামলা হতে পারে। অতীতেও মোদি সরকার এমন হামলা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব হামলা প্রায়ই দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব উস্কে দিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বর্তমানে মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে গোটা ভারতজুড়ে অশন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত মুসলিমদের এ আন্দোলনের মোড় অন্যদিকে ঘোড়ানোর জন্য এ সাজানো হামলা করে থাকতে পারে মোদি সরকার।