খুনের মামলার তদন্ত নিয়ে বিচারপতিকে এসপির ফোন, অসন্তোষ হাইকোর্টের

Daily Ajker Sylhet

admin

০৫ জুন ২০২৩, ০৮:২৬ অপরাহ্ণ


খুনের মামলার তদন্ত নিয়ে বিচারপতিকে এসপির ফোন, অসন্তোষ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার
আমেনা হ্যাচারিতে খুনের মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পিবিআইকে। পুলিশ সুপার পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি তদন্ত করাতে পিবিআই প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের যে বেঞ্চ এই নির্দেশনা দিয়েছিলো সেই বেঞ্চেরই জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ফোন দিয়েছিলেন এসপি পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তা। একজন কর্মরত বিচারপতিকে কেন ফোন দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলির উদ্দেশে আদালত বলেছে, একজন পুলিশ সুপার ফোন করেছেন, এটা আদালতের জন্য বিব্রতকর। এভাবে ফোন করার কি সুযোগ আছে? এ পর্যায়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, পুলিশ রেগুলেশনস অব বেঙ্গল (পিআরবি) এ উল্লেখ রয়েছে আদালতের সঙ্গে একজন পুলিশ সদস্যের আচরণ কেমন হবে। কিন্তু বেঞ্চের বিচারপতিকে ফোন দিয়ে উনি নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ করেছেন। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

এর আগে ওই খুনের মামলার তদন্ত শেষ করতে ৯০ দিন সময় চেয়ে আদালতে আবেদন করেন পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কুদরত-ই-খুদা। লিখিত এই আবেদন উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি।

তখন হাইকোর্ট বলেন, আগের তদন্ত কর্মকর্তা ৪৩ ঘণ্টায় মামলার তদন্ত শেষ করেছিলেন! সেই তদন্ত ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ কারণে পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন দুই মাস পেরিয়ে গেছে কেন তদন্ত শেষ করতে পারছে না। এরপরই হাইকোর্ট ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে ফের নির্দেশ দেন বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের দ্বৈত হাইকোর্র্ট বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্য রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের আমেনা হ্যাচারিতে খুন হন মো. রুবেল (২২)। পরদিন নিহতের স্ত্রী চম্পা বাদী হয়ে সোহেল ওরফে নুরন্নবীকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। আসামি সোহেল মামলার বাদী চম্পার ভাই। পরে বাদী মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান আদালতে মিথ্যাচার করায় এবং ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের বিষয়টি পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়।

এরপরই মামলাটির তদন্ত পান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করে তিন মাস সময় চায় রাষ্ট্রপক্ষ।

হাইকোর্ট বলেন, অধিকতর তদন্তের জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছিলো। এখন আরও তিন মাস চাচ্ছেন, কেন? আর পুলিশ সুপার কেন ফোন করেন? যা পেশাগত অসদাচরণ।

 

Sharing is caring!