Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খেলাপি ঋণ আদায় পরিস্থিতি, কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন

admin

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ০৪:১৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ০৪:১৮ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
খেলাপি ঋণ আদায় পরিস্থিতি, কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন

Manual7 Ad Code

সম্পাদকীয় :
খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংক খাত এবং অর্থনীতির জন্য মারাত্মক এক ব্যাধি। এর নিরাময়ে সাফল্য অর্জিত না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়। বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ ঝুঁকি এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত, এর সমাধানে কী করণীয়, তা-ও বহুল আলোচিত।

Manual4 Ad Code

কিন্তু তারপরও খেলাপি ঋণ আদায়ে সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না কেন; যারা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কেন আরও কঠোর হচ্ছে না, এসব প্রশ্ন বারবার ওঠে। জানা যায়, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছে পাওনা ৮ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির নগদ আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৮৭০ কোটি টাকা। কিন্তু খেলাপিরা ফেরত দিয়েছেন মাত্র ১৬ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২ শতাংশ। অন্যান্য ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায় পরিস্থিতিও কম-বেশি একইরকম।

Manual3 Ad Code

২০২৩ সালের সমঝোতা স্মারকের আওতায় ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল, সেগুলো অর্জন তো দূরের কথা, ধারেকাছেও যেতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক। উলটো তাদের খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। শীর্ষ খেলাপিসহ অন্য খেলাপিদের কাছ থেকে নগদ আদায়ও সন্তোষজনক নয়।

Manual4 Ad Code

বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চমূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, খেলাপি ঋণ, বিদেশে অর্থ পাচার, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, উৎপাদন ও সরবরাহে বিপর্যয় ইত্যাদি যেসব সমস্যা ও সংকট দেশের অর্থনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে, এগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কিত। এসব সমস্যার মূলে রয়েছে দুর্নীতি। কাজেই দুর্নীতি রোধে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে একটি শ্রেণি আছেন, যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছা করেই ঋণের কিস্তি আটকে রাখেন। অভিযোগ রয়েছে, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা সাধারণভাবে অত্যন্ত ক্ষমতাবান। যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তাদের বিরুদ্ধে যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তা ও ঋণের আবেদনকারীদের যোগসাজশেও খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়। কাজেই ব্যাংক কর্মকর্তারা যাতে কোনোভাবেই দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা জানি, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বহু কর্মকর্তাই অত্যন্ত ক্ষমতাবান। তাদের উচিত সব ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া। ঋণ আদায়ে প্রয়োজনে আইন আরও কঠোর করতে হবে, যেখানে ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে বর্জনের বিধান থাকবে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে খেলাপি ঋণ কমবে, এটি আশা করা যায়।

শেয়ার করুন