পূর্বাচলে হাসিনা পরিবারের একাধিক প্লট, দুদকের অনুসন্ধান শুরু

Daily Ajker Sylhet

admin

২৬ ডিসে ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ণ


পূর্বাচলে হাসিনা পরিবারের একাধিক প্লট, দুদকের অনুসন্ধান শুরু

স্টাফ রিপোর্টার:
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের আওতায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ১০ কাঠা করে ৬টি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ রয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি এবং রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকী এই ৬ জন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনে ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দ নিয়েছেন। এই বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এছাড়া, এর আগেও ২২ ডিসেম্বর দুদক সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে। একই অনুসন্ধান দলের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগও তদন্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে তদন্তকারী টিম বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ২০১৪ সালে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু করে। এফবিআইয়ের তদন্তে পাওয়া গেছে যে, জয় এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা পাচার হয়েছে। তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে এবং এটি মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

এছাড়া, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অন্যান্য প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও তদন্ত চলছে। রূপপুর প্রকল্পে ৫০০ কোটি ডলার বা ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যা ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলার অংশ হিসেবে তদন্তাধীন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত ৮টি প্রকল্পেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর দুদক একটি ৫ সদস্যের টিম গঠন করে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। এই টিমের অন্য সদস্যরা হলেন উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, এসএম রাশেদুল হাসান এবং একেএম মর্তুজা আলী সাগর।

এছাড়া, রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছিল। এর পর ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেন।

গত আগস্টে বিভিন্ন পত্রিকা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে, সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই রিট দায়ের করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিকের নাম রূপপুর প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

এদিকে, দুদক এবং হাইকোর্টের নির্দেশনায় তদন্ত চলমান রয়েছে এবং শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

Sharing is caring!