Beanibazarer Alo

  সিলেট     সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিবাদে ডিম নিক্ষেপের ইতিহাস

admin

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৪ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৪ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
প্রতিবাদে ডিম নিক্ষেপের ইতিহাস

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে যদি ডিম ছুড়াতে দেখা যায় বিভিন্ন সময়। সম্প্রতি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে বহনকারী প্রিজন ভ্যান বুধবার সন্ধ্যায় আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছলে ডিম ছুড়ে মারেন বিক্ষুব্ধরা। একে বলা হচ্ছে অহিংস প্রতিবাদ। শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের বহু দেশেই এমন ঘটনা ঘেটেছে আগে। কবে কে প্রথম এই কাজটা করেছিল, তাহলে ইতিহাসে চোখ বুলাতেই হবে।

প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে খাবার ব্যবহার করার ইতিহাস বহু আগের।

বোনাপিটিটয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৬৩ খ্রিষ্টাব্দে খাবারের অভাবের কারণে ‘হাডুরুমেটুম’য়ের অধিবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মূলা ছুড়ে মেরেছিলেন আফ্রিকার তৎকালীন গভর্নর ভেসাপাসিয়ান’কে, পরে যিনি রোমান সম্রাট হয়েছিলেন।

কথিত আছে, মধ্যযুগে বন্দীদের জড়ো করে শাস্তি হিসেবে তাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হত।

তবে লিখিতভাবে ডিম নিক্ষেপের কাহিনি পাওয়া যায় ১৮শ’ সালের দিকে।

Manual8 Ad Code

সেই সময় ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের সাথে সম্পর্কিত স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপাঞ্চল ‘আয়েল অফ ম্যান’য়ে মেথোডিস্ট’দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছি।

আর ১৮৩৪ সালে নিউ হ্যাম্পশায়ার’য়ের কনকোর্ড’য়ে মার্কিন কবি জর্জ হোয়াইটার দাসত্ব বিরোধী বক্তৃতা দেওয়ার সময়, তাকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়।

Manual3 Ad Code

বর্তমান সময়েও ডিমে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। এদের মধ্যে হলিউডের অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার রয়েছেন।

Manual6 Ad Code

২০০৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়াতে নিজের গভর্নর ভোটের প্রচারণা চালানো সময় তার দিকে ডিম নিক্ষেপ করা হয়। অবশ্য তিনি সিনেমার নায়কের মতোই নির্বিকার-ভাবে হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলে দেন ডিমটা।

Manual1 Ad Code

২০০৪ সালে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ফেডোরোভিচ ইয়ানুকোভিচ, বিরোধীদের ছোড়া ডিমে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

২০১১ সালে আফগানি বিক্ষোভকারীরা জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানি কন্স্যুলেটদের দিকে ডিম নিক্ষেপ করে।

২০১৩ সালে লন্ডনে একদল বিক্ষোভকারী, প্রয়াত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের কফিন ডিম দিয়ে পরিপূর্ণ করার হুমকি দেয়। যদিও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াতে চরম নিরাপত্তার কারণে সেটা তারা করতে পারেনি।

একই বছর অগাস্টে ডিমের দাম কমের যাওয়ার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নয়ের বিরুদ্ধে ফরাসি কৃষকরা রাস্তায় সপ্তাহ জুড়ে প্রতিদিন ১ লাখ ডিম ভাঙার শপথ নিয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু গেলম্যান বলেন, প্রতিবাদ করতে গিয়ে খাবার ছুড়ে মারার কারণ হতে পারে- এটা সস্তা, সহজলভ্য এবং দৃশ্যমান।

খাদ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট বোনাপিটিট ডটকময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি ব্যাখ্যা করেন, টমেটো হালকা, নিক্ষেপ করা সহজ, দামও কম। ছুড়ে মারার পর ফেটে গেলে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি জাগায়। ডিমের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই; ফেটে গিয়ে বিচ্ছিরি পরিস্থিতি তৈরি করে।

তিনি উল্লেখ করেন, খাবার ছুড়ে মারাকে সাধারণত অহিংস প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হয়। যেমন- পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়লে, তারা গুলি করতেও পারে। তবে ডিম বা টমেটো মারলে গুলি করাটা পুলিশদেরকে ‘ফুলিশ’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হবে। তাই আমার মনে হয় এই খাবার ছুড়ে মারার একটা প্রতীকী মূল্য রয়েছে।

যেমন- রাশিয়া এবং ইউক্রেনে কারও কানে নুডুলস ঝুলিয়ে দেওয়ার অর্থ হল তাকে বিদ্রূপাত্মক হিসেবে উপস্থাপন করা বা ব্যঙ্গ করা।

যে কারণে রাশিয়ার গণমাধ্যমে ইউক্রেন নিয়ে বিতর্কিত সংবাদ উপস্থাপনের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ইউক্রেনিয়ানরা রাশিয়ার দূতাবাসে স্প্যাগেটি ছুড়ে মেরেছিল। সেগুলো দূতাবাসের দেওয়ালের গ্রিলে ঝুলতেও দেখা গেছে।

শেয়ার করুন