Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে আসা চালানসহ ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান-জাহাজের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

admin

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫ | ০২:০৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ | ০২:০৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
বাংলাদেশে আসা চালানসহ ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান-জাহাজের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরে ইরানি তেল ও এলপিজি পরিবহন এবং এর উৎস গোপনের সঙ্গে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও নৌবাহিনীর ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। দীর্ঘ আলোচনার পর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জাহাজগুলোকে পুনরায় গ্যাস স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হলেও, ভেসেল-ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী এগুলো এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় রয়েছে।

যদিও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে এই ধরনের চালান ও লেনদেনের মাধ্যমে বাংলাদেশকেও এখন ওয়াশিংটনের সম্প্রসারিত নজরদারি ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার আওতায় ধরা হচ্ছে। মার্কিন আইনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ লেনদেনে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর ঝুঁকিতে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার হারানোসহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা।

Manual8 Ad Code

বর্ধিত বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা নেটওয়ার্ক
চলতি বছরের চতুর্থ দফার এই নিষেধাজ্ঞা বিশেষভাবে চীনের রিফাইনারি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের লক্ষ্য করেছে, যারা ইরান থেকে তেল ক্রয় করে থাকে। এর আগে জুলাই ও আগস্ট মাসেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। মার্কিন অর্থ বিভাগ জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ভিত্তিক কিছু প্রতিষ্ঠান ইরানি তেলের উৎস গোপন করতে ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা ছায়া নৌবহর পরিচালনা করত। এসব কার্যক্রমের মধ্যে ছিল এক জাহাজ থেকে অন্য জাহাজে তেল স্থানান্তর এবং ছদ্ম কোম্পানির মাধ্যমে পণ্যের গতিপথ লুকানো।

Manual5 Ad Code

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের তেল ও এলপিজি পরিবহন বা উৎস গোপনের কাজে ব্যবহৃত বহু জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘ম্যাক্স স্টার’, ‘গ্যাস ভিশন’, ‘সি অপেরা’ এবং ‘টিউলিপ’—যেগুলো একত্রিতভাবে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শত শত মিলিয়ন ডলারের ইরানি জ্বালানি পরিবহন করেছে। এছাড়া নিষিদ্ধ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত চালানগুলো বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে পৌঁছেছে।

চীনা প্রতিষ্ঠানও তালিকাভুক্ত
সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান—শানডং জিনচেং পেট্রোকেমিক্যাল গ্রুপ ও রিজাও শিহুয়া ক্রুড অয়েল টার্মিনাল। মার্কিন অর্থ বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, ২০২৩ সাল থেকে তারা ওয়াশিংটনের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত জাহাজ ব্যবহার করে ইরানের কোটি কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান চীনের বিভিন্ন বন্দরে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন সংস্থাকে বিলিয়ন ডলারের অপরিশোধিত তেল পরিবহন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সহায়তা করেছে, যা ইরানের তেল রপ্তানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ তৈরি করেছে।

আঞ্চলিক প্রভাব ও বাজারে প্রভাব
নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে মার্কিন আইনের আওতায় থাকা তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সব সম্পদ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া কোনো মার্কিন কোম্পানি বা নাগরিককে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই ধরনের লেনদেনে সহায়তাকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে।

Manual4 Ad Code

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে, যারা স্পট মার্কেট থেকে এলপিজি ক্রয় করে। ওয়াশিংটনের নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট হয়েছে—ইরানের সীমার বাইরে গিয়ে তারা এখন এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্বত্বভোগীদেরও নজরদারির আওতায় আনছে।

Manual4 Ad Code

ওএফএসি জানিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য শাস্তি দেওয়া নয়, বরং ‘আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা’। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা ছোট আমদানিকারকদের জন্য জ্বালানি সরবরাহকে জটিল করে তুলতে পারে, বিশেষ করে যদি এই অঞ্চলে নিষিদ্ধ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত সরবরাহকারী বা পরিবহন সংস্থাগুলো আগে থেকেই সক্রিয় থাকে।

শেয়ার করুন