“বিয়ানীবাজারের গ্রামীন জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ন ভেংগে পড়েছে”
২৫ ডিসে ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ণ
এডভোকেট মো:আমান উদ্দিন:
দৃষ্টি আকর্ষন: রাস্তা সংস্কার বিভাগ: মাননীয় উপদেষ্ঠা, স্থানীয় সরকার ও পল্লিউন্নয়ন মন্ত্রনালয়, চীফ ইঞ্জিনিয়ার: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, আগারগাঁও ঢাকা ও নির্বাহী প্রকৌশলী: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, সিলেট।
সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার গ্রামীন জনপদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সড়ক পথ। বিয়ানীবাজারবাসী অর্থনৈতিকভাবে কতটুকু শক্তিশালী ব্যাংকের অবস্থান থেকেই অনুমান করা যায়। ৩২টি ব্যাংকের শাখা উপশাখা ও বিপুল কর্মকর্তা, কর্মচারী, এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বাস করে থাকেন। তাহাদের মুল্যায়ন হল, রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বিয়ানীবাজারের হলেও যোগাযোগের দিক থেকে বাংলাদেশের সর্বনি¤œ অবস্থান। পরিবারের হিসাবে শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ বিশে^র বিভিন্ন দেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করিতেছেন। খ্যাতি পাচ্ছেন যোদ্ধা হিসাবে। প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বেসরকারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রায় ৮/১০টা বেসরকারী ক্লিনিক, ৬/৭টি কলেজ, শতাদিক হাইস্কুল, মাদ্রাসা, স্থলবন্দর, পেট্রলবাংলা (২টি গ্যাস কুপ), ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ ষ্টেশন ইত্যাদির উপস্থিতি থাকার পর ও যোগাযোগ বেবস্থার সেবা থেকে সম্পুণ বিচ্ছিন্ন। শীতকালে প্রবাসীরা ছেলে মেয়ে ও পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাংলাদেশে তাহাদের আত্মীয় স্বজনকে দেখতে আসেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের সৌন্দর্যমন্ডিত এলাকা ভ্রমনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্দ হওয়ার জন্য। কিন্তু যোগাযোগের করুন অবস্থা ও গ্যাস ফিল্ড বিয়ানীবাজারে অবস্থানের পরও সেই মন্দাতার আমলে লাকড়ী দিয়ে রান্নাবান্না দেখে হতাশ প্রবাসী অধ্যুসিত এলাকার প্রবাসীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য যোগাযোগ ও গ্যাস ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র নি¤œরুপ।
* বারইগ্রাম থেকে বিয়ানীবাজার হয়ে সিলেটের কদমতলী পর্যন্ত রাস্তাটি বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত। তখন হাতে গোনা কয়টি গাড়ী ছিল মাত্র। বর্তমানে প্রায় পরিবারেই ১/২টি করে গাড়ী আছে। বি.আর.টি অফিস থেকে খবর নিলে জানতে পারবেন। সেই রাস্তাটি এত সরু, যেখানে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের মৃত্যুর মিছিল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে রাস্তাটি প্রশস্থ করে ৪ লেনে উন্নিত করা সময়ের দাবী।
*আমার জানামতে ২০০৫ সালের পর যেসব রাস্তা সংস্কার হয়নি, তাহার বর্ণনা নি¤œরুপ:
১। বিয়ানীবাজার হইতে কসবা ত্রিমুখী বাজার ও শ্রীধরা বাজার পর্যন্ত রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভিতরে)।
২। বিয়ানীবাজার থেকে ফতেহপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভিতরে)।
৩। নয়াবাজার থেকে-কসবা ত্রিমুখী বাজার রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভিতরে)।
৪। উৎসব কমিউনিটি (বড়বাড়ী) রাস্তা থেকে গোলাবশাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভিতরে)।
৫। বিয়ানীবাজার থেকে নয়াগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভিতরে)।
৬। বিয়ানীবাজার (শহীদ টিলা) থেকে- কাজির বাজার বড়দেশ রাস্তা।
৭। বিয়ানীবাজার থেকে তাজপুর আভংগী-সারপার হয়ে বিজিবি ক্যাম্প রাস্তা (মুড়িয়া ইউনিয়ন)।
৮। সারপার গ্রামের রাস্তা (মুড়িয়া ইউনিয়ন)।
৯। নালবহর দাসউরা বাজার রাস্তা থেকে সানেশ^র বাজার হয়ে ফকিরবাজার পর্যন্ত রাস্তা (তিলপাড়া ইউনিয়ন)।
১০। দাসউরা বাজার থেকে তিলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিস রাস্তা হয়ে পিরেরচক ও বিবিরাই বাজার রাস্তা (তিলপাড়া ইউনিয়ন)।
১১। বারইগ্রাম বাজার থেকে বাহাদুরপুর থেকে গাংকুল নিউ মার্কেট হয়ে আছিরগঞ্জ বাজার রাস্তা (তিলপাড়া ইউনিয়ন ও লাউতা ইউনিয়ন)।
১২। তিলপাড়া বাজার থেকে-মাটিজুরা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রাস্তা তিলপাড়া ইউনিয়ন)।
১৩। আছিরগঞ্জ বাজার থেকে চন্দরপুর বাজার রাস্তা (তিলাপাড়া ইউনিয়ন)।
১৪। গডাউন বাজার থেকে কালিবাড়ী বাজার রাস্তা (মুল্লাপুর ইউনিয়ন)।
১৫। মুল্লাপুর ইউনিয়ন হয়ে আব্দুল্লাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা (মুল্লাপুর ইউনিয়ন)।
১৬। বৈরাগীবাজার (পয়েন্ট) থেকে লাউঝারী কুড়ারবাজার দেউলগ্রাম-বাজার রাস্তা (কুড়ার বাজার ইউনিয়ন)।
১৭। পাড়িয়াবহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা (লাউতা ইউনিয়ন)।
১৮। আষ্টসাংগন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা (লাউতা ইউনিয়ন)।
১৯। মাথিউরা ঈদগাহ বাজার থেকে দুয়াখা আরেঙ্গা বাদ হয়ে নালবহর বাজার রাস্তা (মাথিউরা ইউনিয়ন)।
২০। পুরুষপাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা (মাথিউরা ইউনিয়ন)।
২১। মাথিউরা বাজার থেকে ঈদগাহ বাজার হয়ে শিকপুর রাস্তা (মাথিউরা ইউনিয়ন)।
২২। সুতারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রায়বাসী দুধবকশী আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় রাস্তা (মাথিউরা ইউনিয়ন)।
২৩। নবাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শ্রীধরা হযরত হায়দরশাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা রাস্তা (বিয়ানীবাজার পৌরসভা)।
২৪। শেওলা সাবষ্টেশন থেকে-চারখাই বাজার বালিঙ্গা শালেশ^র উচ্চ বিদ্যালয় ও বাজার রাস্তা (শেওলা ইউনিয়ন)।
২৫। শেওলা জির পয়েন্ট রাস্তা থেকে খাড়াভরা রাস্তা (দুবাগ ও শেওলা ইউনিয়ন)।
২৬। শেওলা দিঘলবাগ উচ্চ বিদ্যালয় রাস্তা (শেওলা ইউনিয়ন)।
২৭। বারইগ্রাম বাজার থেকে গাংগপার টিকরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে সানেশ^র বাজার রাস্তা (লাউতা ও তিলপাড়া ইউনিয়ন)।
২৮। দুবাগ আইডিয়েল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে-দুবাগ বাজার নয়াদুবাগ গজুকাটা রাস্তা (দুবাগ ইউনিয়ন)।
২৯। দুবাগ বাজার থেকে সুতারকান্দি স্থলবন্দর রাস্তা (দুবাগ ইউনিয়ন)।
৩০। সিলেটি পাড়া (দুবাগ) ভাংগাল হুদা থেকে সারপার বাজার রাস্তা (দুবাগ ইউনিয়ন)।
৩১। থানার বাজার থেকে কালাইউরা হয়ে কানলি বাজার রাস্তা (লাউতা ইউনিয়ন)।
৩২। মুরাদগঞ্জ বাজার থেকে পাতন আব্দুল্লাপুর হয়ে বারইগ্রাম বাজার রাস্তা (মুল্লাপুর ইউনিয়ন ও লাউতা ইউনিয়ন)।
প্রকাশ থাকা আবশ্যক যে, ১০ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শনকালে অনূল্লেখিত রাস্তা সমুহে অবস্থা আরো করুন।
বিগত ১৭ বৎসরে হয়ত: অদৃশ্য শক্তির ইশারায় রাস্তা উন্নয়নের জন্য টাকা বরাদ্ধ হলেও অদৃশ্য কাগজপত্র তৈরী করে (বিলবাদাল) টাকা উত্তোলন স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। জনগন বিগত ১৭/১৮ বৎসরে তাহাদের পূর্বের রাস্তা সমূহের কোন সংস্কার কাজ দেখতে পায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব, বিয়ানীবাজারের মানুষের চাহিদার আলোকে টিম তৈরী করে এসব রাস্তা সমূহ সরেজমিনে পরিদর্শন করিলে দেখতে পাবেন, রেমিটেন্স যুদ্ধারা কেমন আছেন ? তাছাড়া বিয়ানীবাজারবাসীর গ্যাস সুবিধা নিশ্চিত করে সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয় কাজে অবশিষ্ট গ্যাস ব্যবহার করা। এতসব বৈষ্যম্যের পরে বিয়ানীবাজার বাসী কি নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে?
* বি:দ্র: যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্রিকার কপি পেরণ করা হইল।
লেখক: সভাপতি, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার, সিলেট। মোবাইল: ০১৮১৯-১৭৬২১৭।