“বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব গোলাম মোস্তফা মুন্না সাহেবের জেনে রাখা ভাল ”

Daily Ajker Sylhet

admin

১৮ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ণ


“বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব গোলাম মোস্তফা মুন্না সাহেবের জেনে রাখা ভাল ”

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
ব্যারিষ্টার কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। অখন্ড পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্টার মহানায়ক। বৃটিশ, ভারত এবং মুসলমান জমিয়তে হিন্দু এই তিন শক্তির বিরুদ্ধে মুসলমান জাতির প্রতিনিধিত্ব করেছেন জনাব জিন্নাহ। বৃটিশদের পক্ষে লর্ড কর্ণওয়ালিস, ভারতের পক্ষে পন্ডিত জত্তহরলান নেহেরু এবং মুসলমানদের একাংশের নেতা মাওলানা আবুল কালাম ( ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি )। এই ৩ শক্তিধর ব্যক্তির সাথে টেবিল টক বা গোল টেবিল বৈঠকে ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ—ই ছিলেন একাই একশত। ৩ শক্তিধর ব্যাক্তি চেয়েছিলেন অখন্ড ভারত রাখতে। কিন্তু জনাব জিন্নাহর যুক্তির কাছে হারমানেন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট এলাকা নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করা হয় ১৪ই আগষ্ট ১৯৪৭ সালে। সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষরের সময় ৩ শক্তিধর ব্যাক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রায় ১২০০শত মাইল দূরে অবস্থিত। যদি ও পূর্ব পাকিস্তান ভারতের কাছে নিরাপদ নহে যেনে ও মন্দের ভাল যেনেই স্বাধীনতা স্বারকে স্বাক্ষর করেছিলেন। কারন কাশ্মিরের চেয়ে ভাল হবে। কারন ৩ শক্তি—ই চেয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানকে ভারতের সাথে রাখতে। কিন্তু পারেননি। সেই প্রতিশোধ ভারত ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতার নামে এগিয়ে এসেছিল। প্রকৃতপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে মন থেকে কোন সাহায্য করে নাই। বরং শাসন এবং সুষণ করেছে।

জনাব গোলাম মুস্তফা চট্টগ্রামের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন এডভোকেট সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পিতা এডভোকেট ফজলুল কাদের চৌধুরীর বদান্যতার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টা হয়েছে। জনাব সালাহ উদ্দিন কে কথিত ক্যাঙ্গারু কোর্ট সাজানো রায় কর্তৃক ফাসির আদেশ প্রদান করা হইয়াছে। ফাসি কার্যকর এর সময় সরকার থেকে বলা হয়েছিল রাষ্ট্রপতির নিকট প্রান ভিক্ষা চাইবেন কি না ? জনাব, চৌধুরী বলেছিলেন, আমার তো দৈর্ঘ্য প্রস্ত উচ্চতা অনেক বেশি । কাহার কাছে প্রান ভিক্ষা চাইব? অবশেষে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে দ্বিধাবোধ করেননি।

জনাব মুন্না সাহেবকে বলছি, প্রেসিডেন্ট হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ,বেগম খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা সহ আমলা—কামলা সকলের আইনজীবি ছিলেন ব্যারিষ্টার মোঃ রফিকুল হক। ডঃ কামাল হোসেন, ব্যারিষ্টার মোঃ রফিকুল হক, ডঃ শাহদীন মালিক, ব্যারিষ্টার আমিরুলর ইসলাম প্রমুখদের মত আইনজীবি কি কখন ও কোন ছোট, মাঝারি বা বড় আমলার সাহায্য নিতে গিয়েছিল? না, কখন ও জাননি। সাধারন কোন আইনজীবির ও যাওয়ার কথা নহে। জনাব মুন্না যদি চাকরী জনিত অসততার কারনে কদাচিত উর্ধতন কর্মকর্তা কর্তৃক সাসপেন্ড হন, তাহলে বিজ্ঞ কৌশলীর কাছে করনীয় কি তা জানতে বা সহযোগিতা নিতে আইনজীবির কাছেই যেতেই হবে। আপনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন না। কারন কি জানি ? অন্য কোন জামেলায় যদি পড়ে যান। এ কথা ভেবে কোন সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবেন না ।

যেনে রাখা ভাল, সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে জর্জ কোর্টের বিচারপতি গন বার এবং বেঞ্চের মর্যাদা অক্ষুন্নরেখে বিচার কার্য পরিচালনা করিয়া থাকেন। যদি বারের অসহযোগিতা বা বিচারপতির অসদাচরনে কারনে আইনজীবিগন আদালত বয়কট করেন, তাহলে বিচার বিভাগ অচল হতে বাধ্য। আর বিচার বিভাগ অচল হলে,গোটা জাতি তথা আইন শৃংখলা ভেঙ্গে যাবে। আইন শৃংখলা ভেঙ্গে গেলে নির্বাহী বিভাগের কোন ফাংশন থাকবে না ।

পেশাগত দিকথেকে বিবেচনা করলে, একমাত্র পেশা হচ্ছে আইনজীবি। কারন উক্ত পেশায় টেবিলের নীচ দিয়ে ফাইল আটকিয়ে লেনদেনের সুযোগ নেই। যাহা কিছু লেনদেন করা হয় তাহা কিন্তু প্রকাশ্যে। যদি একজন আইনজীবি ক্লায়েন্টের সাথে মিসকন্ট্রাক্ট করে থাকেন, তাহলে বিকল্প হাজার হাজার আইনজীবি আছেন। যে কোন আইনজীবির কাছে আইনি সহায়তা চাইতে পারে। অনেক পেশার মধ্যে একটি মাত্রপেশার উপাধি ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করা হইয়াছে লার্নেড কথাটি।

একজন আইনজীবি যেহেতু আন্তজার্তিক ভাবে স্বীকৃত বার কাউন্সিল কর্তৃক বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তির্ণ হয়ে সদস্য পদ লাভ করেন, সেহেতু তাহার কর্মপরিধি বিশ্বব্যাপি। কিন্তু একজন নির্বাহী কর্মকর্তার এর জুরিসডিকশন মাত্র সংশ্লিষ্ট উপজেলা। তাও আবার একজন। বিকল্প অন্য কেহ নেই। সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিশেষ ব্যক্তির ফাইল আটকিয়ে দালালের মাধ্যমে উপযোক্ত উৎকোচ গ্রহনের আপোষেবেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিষ্পত্তি করে থাকেন। সুতরাং ঘুষের রাজা আমলা। আর এই কুক্ষিগত ক্ষমতা প্রয়োগে অল্প দিনে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক। তবে গোপন থাকে না। জৈনিক ব্যক্তির ছেলের ছাগল কান্ডের মাধ্যমে কেচ ুখোড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে। বর্তমানে কারা প্রকোষ্টে যত মাফিয়া ডন বন্দি আছেন, খেয়াল করে দেখবেন তাদের নিকটাত্মীয়গন “ল” ইয়ারের চেম্বারের আশে পাশে অসহায়ের মত ঘোর ঘোর করিতেছেন। বলা যায় না, জনাব মুন্না সাহেব এইসব অপরাধে অভিযুক্ত হলে, আমি আপনার আইনজীবি হতে ইচ্ছুক। ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন আমলে, যাহার নতি তৈলব করবেনসেই নতির বিপরীতে কোটি কোটি টাকার ঘুষ নিয়েছেন। এমনকি বায়তুলমোকাররমের খতিব সহ কর্মক্ষেত্রে যাহারাই জড়িত ছিলেন তাহারা কিন্তু দৌড়ে আছেন। সৎ থাকলে আব্দুল মন্নান সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রীর মত সাহস নিয়ে আদালতে যেতে পারতেন। কিন্তু কোন ডাকাত—ই আইনী সহযোগিতা নিতে যাননি। রাস্তা ঘাটে পড়ে মরতেছেন। দুর্নীতির যদি নমুনা অনুসন্ধান করতে হয়, তাহলে অর্থ বৎসরের শেষ সপ্তাহ জুন মাসের কি পরিমান নন জুডিসিয়াল স্টাম্প সরকারী অফিসে জমা হয়, তা থেকে অনুমান করা সহজ কিভাবে ফাইন আটকানো ছিল। উপযুক্ত মাইনার বিনিময়ে ছাড়পত্র নিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জনাব মুন্না যেহেতু ১৪৫টি কমিটির সভাপতি, সেহেতু অঘোষিত রেওয়াজ আছে খাম প্রথার। সুতরাং আখের গোছাতে বেশি দিন সময় লাগার কথা নহে।
ফেনী জেলার আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার আসামী সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হেসেন। তিনি বর্তমানে ১০ বছরের সাজা ভোগ করিতেছেন। উক্ত মামলার বাদী কিন্তু ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়দুল হক সুমন। জনাব মুন্না সাহেব বিয়ানীবাজারে আপনার কর্মকাল দীর্ঘ হউক। যদি অন্য কোথাও চলে যান, আমার আশির্বাদ থাকবে। জনাব মুন্না কর্মকালের বা কর্মজীবনের আলোচিত ব্যবহার ও কর্মকান্ডের উপরে আপনার নামে রচিত বা প্রকাশিত একটি বহি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা আছে। আপনার এসি.আর বা কর্মমূল্যায়ন বা সার্ভিস বুক নির্দিষ্ট সময়ে আপনার উপকারে আসতে পারে। জেনে রাখা ভাল, আপনি যেই রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে জনৈক সিনিয়র সহকারী সচিব এর স্বাক্ষরে নিয়োগপ্রাপ্ত, সেই রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে জনৈক সিনিয়র সহকারী সচিব কর্তৃক আমিও নিয়োগ প্রাপ্ত। জনাব মুন্না সাহেব স্ব—বেতনে, আর “ল” ইয়ার হিসাবে সম্মানপূর্বক নিয়োগ প্রাপ্তি হই বিনা বেতনে। ক্লায়েন্টের নিকট থেকে কাজ করে প্রকাশ্যে ফি নিয়ে থাকি কিন্তু কোন ফাইল আটকিয়ে নহে।

চলবে…………………….

লেখক, সভাপতি- সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার, সিলেট। মোবাইল: ০১৮১৯—১৭৬২১৭

Sharing is caring!