বিশ্ব শিক্ষক দিবসে বিয়ানীবাজারে আলোচনা সভা ও র্যালী
০৭ অক্টো ২০২৪, ০৬:১৪ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
শিক্ষকের কণ্ঠস্বর, শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার এ প্রতিপাদ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলায় আজ আলোচনা সভা ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা পরিবারের উদ্যোগে উপজেলা কনফারেন্স কক্ষে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম।
সভাপতির বক্তৃতায় শিক্ষকবান্ধব চৌকস ইউএনও কাজী শামীম বলেন, শিক্ষকদেরকে সম্মান করা ইবাদতের সামিল। আমাদেরকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের উন্নয়নে যে হারে কোয়ান্টিটির পরিবর্তন হয়েছে সেই অনুপাতে কোয়ালিটির পরিবর্তন হয় নাই। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে শিক্ষকদের একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদের জন্য সোনালী দিন এগিয়ে আসছে।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মৌলুদুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মজির উদ্দিন আনসার, ২০২৪ সনের উপজেলা শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষক মোঃ আতাউর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বাশিস সভাপতি আব্দুদ দাইয়ান, বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা শিউলী বেগম-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুর রহমান।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষার প্রায় ৯৭ শতাংশ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। তাদেরকে সরকার সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডের সমপরিমাণ মূল বেতন দেয়। সেখানে তাদের ১৬ হাজার টাকা স্কেলে বেতন শুরু হয়। এর বাইরে তারা বাড়িভাড়া বাবদ মাসে এক হাজার টাকা ও চিকিৎসা ভাতা বাবদ মাসে ৫০০ টাকা পান। সেই হিসাবে শুরুতে একজন শিক্ষক সরকারি ভাতা ১২ হাজার ৫০০ টাকা পান। এর বাইরে যেসব স্কুলের আয় আছে, তারা ফান্ড থেকেও কিছু টাকা শিক্ষকদের দেয়। তবে সব স্কুল তা দিতে পারে না।
দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে যেখানে ৪০%-৫০% বাড়িভাড়া দেয়া হয় সেখানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়িভাড়া মাত্র ১০০০ টাকা, উৎসব বোনাস পান মূল বেতনের শতকরা ২৫ ভাগ। মাসিক চিকিৎসা ভাতা পায় নির্ধারিত মাত্র ৫০০ টাকা, সকল ডিপার্টমেন্টে বদলি ব্যবস্থা থাকলেও এক্ষেত্রে নেই কোন বদলি সুবিধা, বেসরকারি শিক্ষকদের টিফিন ভাতা নেই, অবসরভাতা নেই, শিক্ষক সন্তানদের শিক্ষা সহায়ক ভাতা নেই, আপ্যায়ন ভাতা নেই, ভ্রমণ ভাতা নেই। বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেতন পান ৬ষ্ঠ গ্রেডের চেয়ে এক ধাপ নিচে, তদ্রুপ সহকারী প্রধান শিক্ষকরাও সরকারি স্কুলের চেয়ে এক ধাপ নিচের বেতন পেয়ে থাকেন। একই সিলেবাস, একই প্রশ্ন, একই শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করালেও সরকারি-বেসরকারি বেতন বৈষম্য অসঙ্গতিপূর্ণ। যা জাতির জন্য লজ্জাজনক।
২০২৪ সনের শিক্ষক দিবসে সামাজিক ও আর্থিকভাবে শিক্ষকদের সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত। সেক্ষত্রে শিক্ষকদের হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে এনে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন তৈরী করতে হবে। যাতে করে এদেশে সত্যিকার অর্থে রত্ন ও মেধাবী তৈরি হয়। আর শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করার দাবি জানান।
আলোচনা সভার আগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার পৌরসভা মোড় থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় পর্যন্ত একটি র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।