ভোটের হিসাবেই আটকে আছে আরিফের প্রার্থিতা…!

Daily Ajker Sylhet

admin

২৬ এপ্রি ২০২৩, ১২:০৭ অপরাহ্ণ


ভোটের হিসাবেই আটকে আছে আরিফের প্রার্থিতা…!

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে যত না আলোচনা তারচেয়ে বেশি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থিতা নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, প্রার্থী হওয়া না হওয়ার ব্যাপারটি ঈদের পর খোলাসা করবেন। কিন্তু তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেছেন। নাটকীয় মোড় নিয়েছেন কৌশলী এ নেতা। এখন তিনি হাঁটছেন অন্যপথে। আছেন মাঠের ভোটের হিসাবে। ভোটের হিসাবেই আটকে আছে তার প্রার্থিতার ঘোষণা। এমন বক্তব্য রাজনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের।

তিনি দলের স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বসেননি। তেমন পরামর্শও নিচ্ছেন না তাদের। নেতারাও তাকে নিয়ে তেমন একটা ভাবছেন না। তারা দল নিয়েই ভাবেন, দলের হুকুমেই নড়েন। ফলে নির্বাচনের ব্যাপারে আরিফ কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এ ব্যাপারে আমজনতার মতোই অন্ধকারে দলের স্থানীয় দায়িত্বশীলরাও। তবে বিএনপির হাইকমান্ড সিলেটের মেয়র পদকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। দফায় দফায় খোঁজও নেওয়া হচ্ছে আরিফ ও সিলেটের। ঈদের পরদিন আরিফের সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ দূত তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এনামুল হক। একান্ত বৈঠক হয়েছে নগরীর উপশহরের একটি হোটেলে। বৈঠক শেষে ঘনিষ্ঠদের নিয়ে তাৎক্ষণিক ওই হোটেলেই বসেছেন আরিফ। বিষয়টি মেয়র নিজেই স্বীকার করেছেন যুগান্তরের কাছে। তিনি বলেন, বৈঠক নয়, এমনি বসেছিলাম। তেমন কিছু নয়, শুধু চা খেয়েছি।

বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের আমলে দুদফায় মেয়র হয়েছেন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। এবার বিজয়ী হলে সেটা হবে হ্যাটট্রিক। কিন্তু শাসক দল বিষয়টি কিভাবে দেখছে, নগরবাসীই বা দুবারের নির্বাচিত আরিফকে কিভাবে নিচ্ছেন -এ দুটি বিষয় খতিয়ে দেখা জরুরি। পাশাপাশি নৌকা ও প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ কতটা ঐক্যবদ্ধ এটাও গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র জানায়, বিশেষ দূত এনামুল হকের সঙ্গে মেয়র আরিফের একান্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিক বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক সহ-সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আ হ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরু, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিফতা সিদ্দিকী, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাদিকুর রহমান সাদিক, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সুরমান আলী, ছাত্রদলের সভাপতি সুমন ও স্বেচ্ছাসেবক দল সিলেট মহানগরের যুগ্ম আ হ্বায়ক আবদুস সামাদ তোহেল। বৈঠকে মেয়র বলেন, সিটি এখন অনেক বর্ধিত হয়েছে। বর্ধিত এলাকার লোকজন নতুন ভোটার হয়েছেন। তাদের অনেক চাওয়া-পাওয়া আছে। এলাকায় না গেলে নতুন ভোটাররা কী চান বোঝা যাবে না। জনপ্রতিনিধির চেয়ারে তারা কাকে চান ওইসব এলাকায় গেলে বোঝা যাবে। মেয়রের এমন বক্তব্যে সায় দেন সবাই।

দ্রুত এসব কাজ সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন তারা। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, মনোনয়ন দাখিলের আরও প্রায় এক মাস সময় হাতে আছে। তবে মনোনয়নের ব্যাপারে ১৫ দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নগরীর বর্ধিত এলাকার পরিদর্শন শেষ হলে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রায় ৮০ ভাগ নিশ্চিত হয়ে যাবে। ওই নেতা বলেন, নির্বাচনে বিজয়ের জন্য ভোটের প্রয়োজন। তাই ভোটের জরিপ শেষ হলেই দ্রুত বাকি সব কিছুই খোলাসা হয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক সহ-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে তিনি বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছুই জানাতে চাননি। তিনি শুধু এটুকুই বলেন -ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ এই চিরসত্য বাক্য অনুসরণ করেই আমরা হাঁটছি। এর ব্যাখ্যা খুঁজলেই সব জানতে পারবেন। তিনি বলেন, সাজানো বাগানে মৌমাছি, ভিমরুল উড়ছে, উড়বে। তাই বলে বাগান ছেড়ে দিতে হবে!

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে মঙ্গলবার বিকালে ফোন করা হলে বলেন, আমি সিটির ৩৩নং ওয়ার্ডে আছি। নতুন এলাকাগুলো ঘুরে ঘুরে নাগরিকদের কী কী সমস্যা রয়েছে তা দেখছি। তবে এটা কোনো নির্বাচনি গণসংযোগ নয়। তিনি বলেন, সবে ঈদ গেছে, সময় অনেক আছে। শিগগিরই সব খোলাসা করব। এর আগে নগরবাসীর মতামত জরুরি। সব ঠিকঠাক হলে ঘটা করেই প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেব।

 

Sharing is caring!