মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে কানাডা প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

Daily Ajker Sylhet

admin

০২ অক্টো ২০২৩, ০৩:৩৭ অপরাহ্ণ


মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে কানাডা প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

কানাডা প্রতিনিধি:
আমেরিকান ভিসানীতি নিয়ে নানা আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্ক হচ্ছে। তা প্রবাসীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আমরা কানাডা প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি পক্ষে-বিপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ কানাডার ভিসানীতি নিয়ে কথা বলতে চেয়েছেন। তুলে ধরেছেন ভারতের ভিসানীতি নিয়ে। কেউ কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

কৃষিবিদ ফায়জুল করিম বলেন, ‘মনে হয় আমেরিকা বাড়াবাড়ি করছে। তবে আমি বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ নির্বাচন প্রত্যাশা করি। নিজেদের স্বার্থেই, বিদেশিদের চাপে নয়। সর্বোপরি, দেশের ও বিদেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এবং মৌলবাদী-জঙ্গিদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন’।

সাংস্কৃতিককর্মী নয়ন হাফিজ মনে করেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নেওয়া আমেরিকার ভিসানীতি বাংলাদেশের জন্য মোটেও মর্যাদাকর নয়। এটি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সামিল। ভিসানীতির উদ্দেশ্য হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে বাংলাদেশে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার লক্ষ্য নিয়ে ভিসানীতি প্রনয়ণ করা হয়েছে। কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করার মালিক বাংলাদেশের জনগণ, অন্য কেউ নয়। এই ভিসানীতির নেপথ্যে আসলে আমেরিকার সুগভীর পরিকল্পনা রয়েছে। দেখা যায়, ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেশে আমেরিকা বিরাজমান সরকারকে নানা অজুহাতে উৎখাত করে তাদের মনের মতো সরকারকে সেই সব দেশের ক্ষমতায় বসিয়েছে। বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ঘটলে এর নজির রয়েছে, আমেরিকার স্বার্থ যে সব দেশে বিঘ্নিত হয়েছে সেই সব দেশেগুলিতে আমেরিকা সরকার উৎখাতের খেলায় মেতে উঠেছিলো। সেই একই খেলা আমেরিকা এবার বাংলাদেশেও খেলতে চাচ্ছে। এতে তারা সফল হলে বাংলাদেশে তাদের একটি পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সরকারের একমাত্র কাজ হবে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে আমেরিকার স্বার্থ পূরণ করা। অনেক দেশেই গণতন্ত্র নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন নেই কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে আমেরিকা নিশ্চুপ। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, সেই সব দেশ আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। আমেরিকার এই double standard আজ বিশ্ব সম্মুখে উন্মোচিত। তাই আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, ভিসানীতির আড়ালে আমেরিকার দূরভিসন্ধি বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক অচিরেই বুঝতে পারবে এবং বড় কোনো অঘটন ঘটার আগেই জনগণ এই দূরভিসন্ধি রুখে দেবে বলে আমি আশাবাদী।

সাংবাদিক সুব্রত নন্দী বলেন, মার্কিন ভিসা স্যাংশন নিয়ে এত উদ্বেগের কারণ কী? বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের সবাইতো আর আমেরিকা যাওয়ার জন্য লাইন ধরে নেই। যদি কিছু চোর-চোট্টা, গুন্ডা-বদমাইশ, অর্থ পাচারকারী, অসুস্থ রাজনীতিবিদ ও তাদের পরিবারের আওতায় পড়ে তাহলে সমস্যা কোথায়?

বেস্ট ট্রাভ্যালের কর্ণধার সুমন জাফর বলেন, বাংলাদেশ সরকারের উচিত আমেরিকানদের ভিসা বন্ধ করে দেওয়া। বাংলাদেশের সেই সাহস আছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের সময় বিশ্ব ব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তা প্রমাণ করছে। আরো একটি বিষয়, আমেরিকার পণ্য-অর্থ-কুচাল-বর্জন করা উচিত বাংলাদেশিদের।

টরন্টো প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যাংকার রুনা লায়লা বলেন, বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত ভিসানীতির মাধ্যমে একদিকে বিশ্ব নাগরিকদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। অন্য দিকে বিবেচনা করলে, আমেরিকা তার ঘরে প্রবেশের অধিকার কাকে দেবে বা না দেবে সেটা তাদের ইচ্ছে এবং নীতিগত ব্যাপার। ফলে পক্ষে ও বিপক্ষে দু’দিকেই যুক্তি আছে।

এ ব্যাপারে প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, আমার মনে হয় নির্বাচন তুলনামূলক সুষ্ঠু হওয়া এবং বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে টেনে আনার ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া অবৈধ উপায়ে পাচার হয়ে আসা টাকার একটি অংশ আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ফেরত যাবে।

Sharing is caring!