Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্তের আসল নাম-পরিচয় জানা গেছে

admin

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্তের আসল নাম-পরিচয় জানা গেছে

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে নিজেদের ফ্ল্যাটে মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন গৃহকর্মী ‘আয়েশা’কে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার প্রকৃত নাম-পরিচয় এবং স্বামীর পরিচয়ও জানা গেছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

Manual1 Ad Code

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা গ্রেপ্তারের পর প্রকাশ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদেই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে ধারণা তদন্তসংশ্লিষ্টদের।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার নাটোরে মা–মেয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যার পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া প্রায় ২০ বছর বয়সী এই তরুণীকে জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছেন স্বজনেরা। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক।

পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তসূত্র বলছে, গৃহকর্মী নিজের আসল নাম ও ঠিকানা গোপন করেছিলেন। বাসার কাজে যোগ দেওয়ার সময় সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। পরে যে ফোনটি নিয়ে গেছেন, সেটি বাসা থেকে বেরিয়েই বন্ধ করেন। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার বেশির ভাগই অচল থাকায় তিনি কোনদিকে পালিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

Manual3 Ad Code

সূত্র বলছে, লায়লা আফরোজের পরিবারের সঙ্গে তরুণীর আগের কোনো ফোনযোগাযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি সব সময় বোরকা পরে থাকতেন, তাই ভবনের সিসিটিভিতেও তার মুখ স্পষ্টভাবে ধরেনি। ফলে তাকে শনাক্ত করতে ম্যানুয়ালভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়েছে।

Manual1 Ad Code

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানিয়েছেন, গৃহকর্মীর দেওয়া নাম-ঠিকানা ভুল হওয়ায় শুরুতে তার পরিচয় নিশ্চিত করা কঠিন ছিল। তবে দ্রুতই তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জোড়া হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ আছে, সোমবার সকাল ৭টার দিকে তিনি স্কুলে যাওয়ার পর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাসায় ফিরে তিনি স্ত্রী ও মেয়ের লাশ দেখতে পান। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় তিনি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে যান।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার দেহে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন।

ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে মা–মেয়ের মরদেহ নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হয়।

Manual3 Ad Code

শেয়ার করুন