Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেসব সুবিধা থাকছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে

admin

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ | ০৬:১৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ | ০৬:১৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
যেসব সুবিধা থাকছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
অপরূপ নির্মাণশৈলীর দৃষ্টিনন্দন শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের একটি অংশের যাত্রা শুরু হলো। এর মধ্য দিয়ে ঢাকার আকাশপথে সম্ভাবনার নবদিগন্ত উন্মোচিত হলো।

এখানে যাত্রীদের জন্য ই-গেট, হাতের স্পর্শ ছাড়া চেকিং, নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করাসহ অত্যাধুনিক সুবিধা রাখা হয়েছে। এছাড়া সুপরিসর অ্যাপ্রোন, বিশাল গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত লাগেজ বেল্ট যাত্রীদের দেবে নতুন অভিজ্ঞতা।

তবে এসব সেবা পাওয়া যাবে ২০২৪ সালের শেষদিকে। এখন তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করা হলেও যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক অনেক কাজ বাকি, যা শেষ করতে আরও এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

নতুন টার্মিনালের ৯০ শতাংশ কাজ সফট লঞ্চিংয়ের জন্য সম্পন্ন হয়েছে এবং শনিবার থেকে এয়ারলাইন্সগুলো টার্মিনালের নতুন পার্কিং বে ব্যবহার করতে পারবে। সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং ক্যালিবারেশন তৃতীয় টার্মিনালটি আগামী বছরের শেষে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ চালু হবে।

নতুন টার্মিনালটি বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রী পরিষেবা দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি পালটে দেবে। পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোসহ থার্ড টার্মিনালের ফ্লোর এবং সিলিংয়ে নজরকাড়া প্যাটার্নের বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই পরিশীলিত।

তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে সক্ষম হয়। নতুন টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর অংশ) এবং একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এছাড়া আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।

Manual7 Ad Code

তৃতীয় টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তৃতীয় টার্মিনালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের আগে বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্স ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে চায়, যা দেশের এভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কত তলা: তৃতীয় টার্মিনালটি তিন তলা বিশিষ্ট।

প্রথম তলা: ব্যাগেজ হ্যান্ডেলিং সিস্টেম, ভিভিআইপি, ভিআইপি ইত্যাদি।

দ্বিতীয় তলা: বহির্গমন লাউঞ্জ, ক্যান্টিন, বোর্ডিং ব্রিজ।

তৃতীয় তলা: বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, বিদেশগামী যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, চেক ইন কাউন্টার, সিকিউরিটি সিস্টেম ইত্যাদি।

ভিভিআইপি যাত্রীদের জন্য: তৃতীয় টার্মিনালে ভিভিআইপি ও ভিআইপি যাত্রীদের জন্য আলাদা করে বিশেষ ব্যস্থাপনা থাকবে। টার্মিনালের দক্ষিণ প্রান্তে ৩ হাজার ৬৫০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে রয়েছে এই আয়োজন।

Manual7 Ad Code

টার্মিনালের আয়তন: তৃতীয় টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গ মিটার। বর্তমান দুটি টার্মিনালের আয়তন এক লাখ বর্গ মিটার।

ট্রানজিট: ট্রানজিট যাত্রীরা প্রধান বহির্গমন লাউঞ্জ ব্যবহার করবে, যার আয়তন ৪০ হাজার বর্গ মিটার।

যাত্রী ধারণ ক্ষমতা: তৃতীয় টার্মিনালের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বছরে এককোটি ৬০ লাখ। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে বছরে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৮০ লাখ।

আগমনী যাত্রীদের জন্য লাগেজ বেল্ট: তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের লাগেজ বেল্ট থাকবে ১৬টি। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে লাগেজ বেল্ট আছে ৮টি।

আগমনী যাত্রীদের জন্য কাস্টম: বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি কাস্টম হল থাকবে। সেখানে ৬টি চ্যানেল থাকবে।

Manual2 Ad Code

চেক ইন কাউন্টার: তৃতীয় টার্মিনালে চেক ইন কাউন্টার থাকবে ১১৫টি, এরমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি।

ইমিগ্রেশন কাউন্টার: তৃতীয় টার্মিনালে ইমেগ্রেশন কাউন্টার মোট ১২৮টি। এরমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। মোট ১২৮টি কাউন্টারের মধ্যে বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৬৬টি, আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৫৯টি এবং ভিভিআইপি ৩টি।

বোর্ডিং ব্রিজ: বর্তমান দুটি টার্মিনালে আছে ৮টি বোর্ডিং ব্রিজ। তৃতীয় টার্মিনালে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে। পরবর্তী সময়ে আরেকটি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত করা হবে।

লিফট: ৪১টি। এরমধ্যে প্যাসেঞ্জার লিফট ৩৪টি ও সার্ভিস লিফট ৭টি

এসকেলেটের: ৩৫টি, মুভিং ওয়াকওয়ে: ১৪টি

হোল্ড ব্যাগেজ এক্সরে মেশিন: ২৭টি, কেবিন ব্যাগেজ এক্সরে মেশিন: ৪০টি

বডি স্ক্যানার: ১১টি, মেটাল ডিটেক্টর: ৫২টি

উড়োজাহাজ পার্কিং বে: বর্তমানে আছে ২১টি। তৃতীয় টার্মিনালে পার্কিং বে রয়েছে ৩৭টি।

মাল্টি লেভেল কার পার্কের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমানে বহুতল কার পার্কি ভবনে ৩০০টি গাড়ি রাখা সম্ভব। তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিংয়ে ১২৩০টি গাড়ি রাখা যাবে।

আমদানি কার্গো ভবনের আয়তন: বর্তমান কার্গো ভবনের আয়তন ১৩ হাজার ৭০০ বর্গমিটার। নতুন টার্মিনালের ভবনের আয়তন ২৭ হাজার বর্গমিটার।

আমদানি কার্গো ভবনের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমান ভবনের ধারণ ক্ষমতা বছরে ৮৪ হাজার ৩৭৯ টন। নতুন ভবনের ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৭০ টন।

রফতানি কার্গো ভবনের আয়তন: বিদ্যমান ভবনের আয়তন ১৯ হাজার ৬০০ বর্গমিটার। নতুন ভবনের আয়তন ৩৬ হাজার বর্গ মিটার।

রফতানি কার্গো ভবনের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমানে বছরে ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৪৬০ টন। নতুন ভবনে ধারণ ক্ষমতা ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪১ টন।

অন্য টার্মিনালের সঙ্গে সংযোগ: বর্তমানের দুটি টার্মিনালের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের কোনও সংযোগ থাকবে না। তবে পরবর্তী সময়ে প্রকল্পে করিডোর নির্মাণ করা হবে।

সড়কের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের সংযোগ: ঢাকা- ময়মনসিংহ হাইওয়ের সঙ্গে মূল সড়ক ছাড়াও এলিভেটেড ড্রাইভওয়ের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলের একটি স্টেশন মাটির নিচে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মেট্রোরেল স্টেশনের সংযোগের জন্য টানেল নির্মাণ করা হয়েছে।

Manual1 Ad Code

শেয়ার করুন