যে কারণে গৃহশিক্ষককে খু ন করেছিলেন মাহি, বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

Daily Ajker Sylhet

admin

১৫ মে ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ণ


যে কারণে গৃহশিক্ষককে খু ন করেছিলেন মাহি, বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার তেলীজুরী এলাকায় সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশ থেকে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় মুক্তারুল হকের (৩৬) মরদেহ পড়েছিল। পরে স্থানীয়দের খবরে সেই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা রহমত আলী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে জৈন্তাপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্তের পর তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই সিলেট জেলা।

হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর সোমবার (১৩ মে) পিবিআই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামি মাহিকে গ্রেফতার করে। পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন মাহি।

আদালতেও হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এ যুবক। আর তার এই স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে ইফতেখার রশিদ মাহিকে প্রাইভেট টিউশনি পড়াতেন গৃহশিক্ষক মুক্তারুল হক। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ভয়ভীতি দেখিয়ে মাহিকে (২২) বলাৎকার করেন তিনি। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে মাহিকে বলাৎকার করে আসছিলেন মুক্তারুল।

যুবক বয়সে এসেও মাহিকে বলাৎকারের চেষ্টা করলে তাতে রাজি হচ্ছিলেন না মাহি। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাহির ছোট বোনকে ধর্ষণের হুমকি দেন মুক্তারুল নামে ওই গৃহশিক্ষক। এর প্রতিশোধ নিতেই মাথায় আঘাত করে গৃহশিক্ষক মুক্তারুলকে হত্যা করেন মাহি।

নিহত মুক্তারুল হক সিলেটের জৈন্তাপুরের তেলিজুরী গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। অভিযুক্ত মাহি একই গ্রামের বজলুর রশিদ শামীমের ছেলে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এ যুবক। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র উপপরিদর্শক ঝলক মোহন্ত।

তিনি বলেন, ‘ঘটনার তদন্তভার পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়। পরে সোমবার (১৩ মে) অভিযান চালিয়ে ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে মূল আসামি ইফতেখার রশিদ মাহিকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর মাহি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মাহি জানিয়েছেন, মুক্তারুল তাকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রাইভেট পড়াতেন। তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তেন তখন থেকে মুক্তারুল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলাৎকার শুরু করেন। পাশাপাশি অশ্লীল দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। বিভিন্ন সময় বাধা দিলে তাকে ব্লেড দিয়ে দুই উরুতে অসংখ্য জখম করেন। অশ্লীল দৃশ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এবং স্কুলের পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে তাকে দীর্ঘ বছর যাবৎ বলাৎকার করে আসছিলেন গৃহশিক্ষক মুক্তারুল। যুবক বয়সেও এসে তাকে বলাৎকার করতে চাইলে মাহি বাধা দেন। এ সময় মুক্তারুল মাহির নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছোট বোনকে ‘নষ্ট’ করার হুমকি দেন। তাই গৃহশিক্ষককে খুন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান মাহি।’

Sharing is caring!