Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজান সামনে রেখে বাড়তি মূল্যে ফল

admin

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৩ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৩ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
রমজান সামনে রেখে বাড়তি মূল্যে ফল

Manual3 Ad Code

ইয়াসিন রহমান :
ডলার সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে এমনিতেই ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এর মধ্যে রমজান ঘিরে বাড়তি মুনাফা করার ছক তৈরি করছে খুচরা ফল বিক্রেতা সিন্ডিকেট সদস্যরা। তারা পাইকারি বাজার থেকে কম মূল্যে ফল কিনলেও খুচরা পর্যায়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। এতে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এই পণ্যটি বাদ দিচ্ছেন। এছাড়া খুব প্রয়োজন হলে খরচ সমন্বয় করে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি মূল্যের কারণে ইফতারে ফল কিনে খাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন ভোক্তাসাধারণ।

সোমবার রাজধানীর পাইকারি আড়ত বাদামতলী গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ক্রাউন আপেল ২০ কেজির বাক্স বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকা। সেই হিসাবে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজির দাম হয় ১৯৫-২০০ টাকা। তবে রাজধানীর খুচরা বাজারে এই ক্রাউন আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় প্রতি কেজি ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইকারি আড়তে ১৫ কেজির বাক্সে মাল্টা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০-২৬০০ টাকায়, যা প্রতি কেজির দাম হয় ১৫৬-১৭৩ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এই একই মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২১০-২৩০ টাকা। পাইকারি আড়তে নয় কেজি ওজনের বাক্সে চায়না কমলা বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০-১৮০০ টাকা, যার প্রতি কেজির দাম হয় ১৯৪-২০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এই একই কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকা।

এছাড়া বাদামতলীর আড়তে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের তরমুজ ১০০ পিস বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে প্রতি পিস তরমুজের পাইকারি মূল্য হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা। তবে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে পিস হিসাবে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়নি। বিক্রেতারা খুচরা পর্যায়ে ৪-৫ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৫০ টাকা কেজি দরে। এতে ৫ কেজির একটি তরমুজের দাম পড়ছে ২৫০ টাকা। অথচ আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস তরমুজ কিনছেন ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।

Manual2 Ad Code

রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, গত বছরও প্রতি সপ্তাহে ফল কিনতাম। বছরের তুলনায় সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি রোজা সামনে রেখে বিক্রেতারা হঠাৎ করেই দাম আরও বাড়িয়েছে। তাই সংসারের সব খরচ মিটিয়ে এখন আর ফল কেনা হয় না। কিন্তু রোজা রেখে ইফতারে ফল না রাখলে চলে না। তবে এবার উচ্চমূল্যের কারণে মনে হচ্ছে ইফতারে ফল রাখা হবে না।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিদেশি ফলকে ‘বিলাসপণ্য’ দেখিয়ে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে গত বছর রোজার আগে ঠিক একই সময়ের তুলনায় সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এর মধ্যে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট অতি মুনাফার লোভে দাম আরও বাড়াচ্ছে। কারণ পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে ভোগান্তিতে পড়বে ভোক্তা।

বাদামতলী জননী ফলের আড়তের মহাজন জালাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে যে দরে ফল আনি, পরে কিছু কমিশনে বিক্রি করে দিই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রোজা উপলক্ষ্যে খুচরা বিক্রেতারা সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে ফল নিলেও খুচরা পর্যায়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। এ সিন্ডিকেট না ভাঙলে ক্রেতারা রোজায় ফল কিনতে স্বস্তি পাবে না। তাই তদারকি করা প্রয়োজন।

Manual6 Ad Code

নয়াবাজারের খুচরা ফল বিক্রেতা মো. রবিন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে আমরা যে দরে ফল আনি, কিছু লাভে তা বিক্রি করি। আমাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। পাইকারি পর্যায় থেকে ফল আনতে কিছু ফল নষ্ট হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়।

Manual5 Ad Code

জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, রোজা ঘিরে একটি রোডম্যাপ অনুযায়ী বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। একই সময় বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলের বাজারেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। অনিয়ম পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। অনিয়ম পেলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

Manual5 Ad Code

শেয়ার করুন