Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ দিতে চায় সরকার, শিক্ষকদের না

admin

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | ০৫:৫৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | ০৫:৫৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ দিতে চায় সরকার, শিক্ষকদের না

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া পাঁচ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দিতে রাজি সরকার। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন এটি তাঁরা মানবেন না। তাদের দাবি এ বছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া এবং আগামী অর্থ বছরে আরও ১০ শতাংশ হারে তা বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে।

Manual6 Ad Code

আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল আজ দুপুরের পর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আবরারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সাংবাদিকদের কাছে সরকারের অবস্থান জানান উপদেষ্টা।

Manual5 Ad Code

বর্তমানে বাজেট বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর্যায়ে থাকা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানোর কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার সাংবাদিকদের বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ (বাড়িভাড়া) তারা দিতে পারবে এবং সেটি ন্যূনতম দুই হাজার টাকা থাকবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর থেকে বেশি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এটা শিক্ষক-কর্মচারীদের জানানো হয়েছে।

সামনের অর্থ বছরের বাজেটে যেন আরও কিছু শতাংশ বৃদ্ধি করা যায় সেটার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীরা সেই প্রস্তাবে রাজি না। তাঁরা বলেছেন, এখন ১০ শতাংশ দিতে হবে, সামনের বছর ১০ শতাংশ দিতে হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন ‘এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে। আমরা সেটিতে রাজি হইনি। সংস্থান থাকলে করতে করতাম।’ এখন বাজেটের যে অবস্থা তাতে ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। আসন্ন পে কমিশনে তা বাড়ানোর ইঙ্গিত পাচ্ছেন বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা।

এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন বলেন, তারা হিসেবে করে দেখেছেন দুই হাজার টাকা করে দিলে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া পাবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা জানিয়েছেন এই প্রস্তাব তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

Manual6 Ad Code

এদিকে সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি দাবি করেন তাঁরা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। তারা বলছেন, এর মধ্যে তাঁদের দাবি না মানা হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সচিবালয় থেকে ফিরে এক বক্তব্যে এসব কথা জানান এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী।

সচিবালয়ের শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে হওয়া আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আপনি আলোচনা করেননি। আলোচনার নামে আইওয়াশ করেছেন শিক্ষকদের সঙ্গে৷’

Manual4 Ad Code

প্রধান উপদেষ্টাকে শিক্ষকদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘আমাদের আর কারও উপর ভরসা নাই। আমাদের একমাত্র ভরসা আপনি, যদি মনে চায়, সমাধান করেন। আর যদি মনে না চায়, দাবানলের মতো আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।’ দেলোয়ার হোসেন আজিজী উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টা উদ্যোগ নিয়ে সমস্যার সমাধান না করলে শিক্ষকেরা বিকেল পাঁচটায় মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন।

এই শিক্ষক নেতা আরও বলেন, প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাঠিয়ে শিক্ষকদের গুলি করে হত্যা করুক, তবুও দাবি আদায় না হলে শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরবেন না।

বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য আর্থিক অনুদান দেয় সরকার, যা এমপিও (মান্থলি পে অর্ডার) নামে পরিচিত। বর্তমানে সারা দেশে ছয় লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আছেন ৩ লাখ ৯৮ হাজার, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পৌনে ২ লাখের মতো এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আছেন ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় বেশি, তারা এমপিওর বাইরে শিক্ষক ও কর্মচারীদের টাকা দেয়। তবে বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেই সক্ষমতা থাকে না।

এর মধ্যে তারা এখন মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা করা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে পাঁচ দিন দিন ধরে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করছেন। কখনো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায়, কখনো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বা হাইকোর্টের সামনের সড়কে বা শাহবাগ মোড়ে এসব কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দাবির প্রতি সংহতিও জানিয়েছে।

শেয়ার করুন