সড়কের জমি দখল করে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর বাগানবাড়ি!
২৭ আগ ২০২৪, ০৪:৪৮ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
নিজের পৈতৃক ভিটা মায়ের নামে করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দান করে মহাসড়কের আংশিক ভূমি দখল করে বেআইনিভাবে বাগানবাড়ি বানানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে।
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরে সাবেক মন্ত্রীর মালিকানাধীন হিজলবাড়িটি নির্মাণের ক্ষেত্রে মহাসড়ক আইন, ২০২১ এর লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
আইনের ৯ ধারার ১১ উপধারায় বলা আছে, ‘মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাইবে না।’ আইনে ‘সংরক্ষণ রেখা’ বলতে মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে ভূমির প্রান্তসীমা (right of way) হতে ১০ (দশ) মিটার অথবা সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত রেখা বুঝানো হয়েছ৷
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের হিজলবাড়ির অবস্থান সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের একেবারে কাছ ঘেঁষা। সড়ক থেকে বাড়িটির দূরত্ব ২ থেকে ৩ ফুট। সড়কের পাশে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে ১০ মিটার বা ৩৩ ফুটের বাইরে নির্মাণের যে বাধ্যবাধকতা এ ক্ষেত্রে সেটি লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইনের প্রয়োগ হলে পুরো বাড়িটিই উচ্ছেদ করতে হবে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে।
আইনজ্ঞদের অভিমত, মহাসড়কের স্লোপ থেকে ১০ মিটার বা প্রায় ৩৩ ফুটের ভিতরে নির্মিত সব ধরনের স্থাপনা অবৈধ। আইন অনুযায়ী এ জাতীয় স্থাপনা উচ্ছেদে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আশু ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায় তারাও আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হবেন।
পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সালেহিন চৌধুরী শুভ বলেন, তিনি ভদ্র ও সজ্জন হিসেবে পরিচিতি পেলেও রাষ্ট্রীয় ভূমির উপর নিজ বাড়ি নির্মাণ করে আইন লঙ্ঘন ছাড়াও একজন লোভী মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, আসলে অনেক ক্ষেত্রেই মহাসড়ক আইনের প্রতিপালন হয় না। সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কি না আমরা সার্ভেয়ার পাঠিয়ে মাপজোক করে দেখব। এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আত্মগোপনে থাকায় প্রতিবেদনে সাবেক মন্ত্রী এমএ মান্নানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।