সিরাজগঞ্জে ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ গ্রেফতার ৬
০৭ মে ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে এক প্রার্থী গোপন বৈঠক করায় ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল।
সোমবার রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃত প্রিসাইডিং অফিসাররা হলেন- যমযনা ডিগ্রি কলের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মো. আবু সামা, বাহুকা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, গতকাল রোবার রাত ৮টার দিকে খবর আসে কতিপয় প্রিসাইডিং অফিসার একজন প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করছেন। খবরটি জানার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ এবং রিটার্নিং অফিসার তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু তাদেরকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তারা কোনোভাবে খবর পেয়ে দ্রুত সরে যান। পরবর্তীতে রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়ের করার পর ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ ঘটনার মূল হোতা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে ১০ জন প্রিসাইডিং অফিসারের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের পরিবর্তন করে নতুন প্রিসাইডিং অফিসারকে নিয়োগ দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা প্রার্থীকে শোকজ করেছি। তিনি শোকজের জবাব দিয়েছেন। পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করব।
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া কাদাই পার্কে আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোপনে বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। বৈঠকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা হাজির হলে রিয়াজ উদ্দিন ও তার লোকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিনকে শোকজ করেছে রিটার্নিং কর্তকর্তা।
আগামী ৮ মে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- এস.এম নাসিম রেজা নুর (মোটরসাইকেল), তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। মো. নুরুল ইসলাম সজল (কাপ-পিরিচ), তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন (আনারস), তিনি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। রাশেদ ইউসুফ জুয়েল (দোয়াত কলম), তিনি জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ভাতিজা। এস.এম আহসান হাবিব (ঘোড়া), তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।