Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাগতম মাহে রমজান

admin

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩ | ০৪:০১ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ | ০৪:০১ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
স্বাগতম মাহে রমজান

Manual6 Ad Code

মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী :
বছর ঘুরে আবারো আমাদের মাঝে শুভাগমন করেছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। মাহে রমজানে সাওম পালন করা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ।

Manual5 Ad Code

সাওম শুধু অবশ্য পালনীয় ইবাদতই নয়, বরং আত্মিক উন্নতি ও নৈতিক উৎকর্ষ সাধনেও সাওমের ভূমিকা অনন্য। কেননা সাওমের উদ্দেশ্যই হলো তাক্ওয়া অর্জনের মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভ করা।

Manual6 Ad Code

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন মাজিদে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন- হে ইমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা তাক্ওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত নং- ১৮৩)।

Manual1 Ad Code

এই বছরের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বৈশ্বিক ও দেশীয় আর্থিক মন্দার কারণে অনেকের জন্যই পুষ্টিকর সাহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেই সাহায্যের আশায় ছুটছেন বিত্তবানদের দুয়ারে দুয়ারে। কেউ সাহায্য পাচ্ছেন, আবার কেউ বঞ্চিত হয়ে ঘরে ফিরছেন।

Manual3 Ad Code

আমাদের উচিত মাহে রমজানের আগমনের এই মূহূর্তে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। তাদের সাহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করা।

মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানুষ তারা, যারা মানুষকে খাওয়ায়। (মুসনাদে আহমদ)।

মূলত সিয়াম সাধনার মাধ্যমেই মানুষের পশু প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে নৈতিকতা ও আত্মিক উন্নতি সাধন সম্ভব। সাওম পালনের মাধ্যমে যদি অন্তরে আল্লাহভীতি ও আত্মশুদ্ধি অর্জন করা না যায় তবে নিছক উপবাস দ্বারা কী ফায়দা হতে পারে? মানুষের অন্তরে তাক্ওয়া অর্থাৎ আল্লাহভীতি সৃষ্টি হলেই কেবল শোষণ, জুলম, নির্যাতন, সন্ত্রাস, অন্যের অধিকার হরণ, লোভ-লালসাসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত ও সামাজিক কুসংস্কার, অবিচার, অন্যায়, গর্ব-অহংকার তথা দাম্ভিকতার করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।

রোজা একজন ব্যক্তির উপর বিভিন্ন আচরণগত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা, পরচর্চা, ধোঁকা দেয়া, প্রতারণা করা, হিংসা-বিদ্বেষ, অশ্লীলতা- এসব কর্মকাণ্ড এমনিতেই নিষিদ্ধ। কিন্তু রোজা পালনকালে এগুলো পরিহারের চর্চা হয় অনেক বেশি।

এ মর্মে রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি সাওম পালন করেও মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা ও অন্যান্য পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারলো না তার পানাহার পরিত্যাগ করা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি)।
এক মাসের এ চর্চা সারা বছর অনুসরণ করা হলে একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন সমাজ গড়ে উঠা সহজেই সম্ভব।

নৈতিক অবক্ষয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধানতম সমস্যা। আজ মুসলিম মিল্লাতের উচিত চারিত্রিক অধঃপতন থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং নেতিয়ে পড়া চেতনাকে জাগ্রত করা।

নৈতিকতার উৎকর্ষ সাধনই হোক এবারের মাহে রমজানের অঙ্গীকার। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ তাওফিক কামনা করছি।

লেখক: আলেম, প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক

শেয়ার করুন