Beanibazarer Alo

  সিলেট     শনিবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনালে কঠোর নিরাপত্তা

admin

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ | ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ | ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনালে কঠোর নিরাপত্তা

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীতে আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা হবে চব্বিশের জুলাই গণহত্যা–সম্পর্কিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঐতিহাসিক রায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলার এ রায় ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকা—সবখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যদের কড়া অবস্থান চোখে পড়ছে।

Manual2 Ad Code

সোমবার সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকা নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের আশপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর পাহারায় রয়েছে। মাজার গেটের সামনে সেনা সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়। ট্রাইব্যুনালের ভেতরে ও বাইরে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।

Manual8 Ad Code

আজ যে রায় ঘোষণা হবে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ঘিরে। ট্রাইব্যুনাল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এ রায়ের জন্য শুধু দেশ নয়, বিশ্বের বহু দেশ অপেক্ষা করছে। বিচারটি যেন ভবিষ্যতের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকে—এ উদ্দেশ্যে রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

Manual5 Ad Code

শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার

Manual7 Ad Code

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষও এ বিচারপ্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে দেখতে পারেন। বিশ্বজুড়ে দর্শকদের জন্যও রায়টি সরাসরি প্রচার করা হবে।

গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা।

গত ২৩ অক্টোবর এ মামলায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, সেসব বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন তিনি। পরে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের কয়েকটি বিষয়ে জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর তাদের কিছু কথার পাল্টা উত্তর দেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন।

এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। তবে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেওয়ায় যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা-কামালের চরম দণ্ড বা সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদও তার অ্যাকুইটাল (খালাস) চেয়েছেন। সবমিলিয়ে সাবেক এই আইজিপির মুখে হাসি ফুটবে নাকি অন্য কিছু; তা জানা যাবে রায় ঘোষণার দিন।

এ মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর।

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

শেয়ার করুন