Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি

admin

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩ | ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ | ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি

Manual6 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
অমর একুশে বইমেলার সমাপ্তি হলো মঙ্গলবার। করোনা মহামারির পর স্বতঃস্ফূর্ত এক বইমেলার স্বাদ পেল পাঠক, যেখানে ছিল না মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা।

এবারের মেলায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে গত বছর বইমেলায় বিক্রি হয়েছিল ৫২ কোটি টাকার বই এ বছর নতুন বই এসেছে ৩ হাজার ৭৫০টি, গত বছর এসেছিল ৩ হাজার ৪১৬টি।

Manual8 Ad Code

বইমেলার সমাপন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার এই তথ্য জানান মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কেএম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বইমেলা কমিটির দেওয়া ফর্মে প্রকাশকরা যে তথ্য দিয়েছেন, তা থেকে এই উপাত্ত প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু নতুন বই বা বই বিক্রির তথ্যটি সঠিক নয় বলে বইমেলা পরিচালনা কমিটি মনে করে অনেক প্রথিতযশা প্রকাশকও নতুন বই বা বই বিক্রির তথ্য দেননি পূর্ণাঙ্গভাবে। তাই এই তথ্যটি বাস্তবসম্মত নয়

প্রতিবছর মেলা শেষে নতুন বইয়ের মধ্যে কতটি মানসম্মত, ওই তথ্যটি প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি, যা নিয়ে বিতর্কের অন্ত থাকে না। এ বছর বাংলা একাডেমি ওই তথ্যটি প্রকাশ করেনি।

এ প্রসঙ্গে কেএম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এত স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন বইয়ের মান যাচাই করা সম্ভব না। আর করলেও তা যথাযথ হবে না। তিনি জানান, ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬৩ জন পাঠক, দর্শক ও লেখক মেলায় এসেছেন।

Manual5 Ad Code

গুণিজন স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ : অমর একুশে বইমেলার শেষ দিনে মূল মঞ্চে দেওয়া হয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার। ২০২২ সালে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন মার্কিন লেখক ও অনুবাদক ক্যারোলিন রাইট ও কানাডাপ্রবাসী সাহিত্যিক জসিম মল্লিক। ক্যারোলিন রাইট মেলায় আসতে পারেননি, তবে জসিম মল্লিক সশরীরে এসে মেলায় তার পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।

এ পুরস্কারের মূল্যমান ১ লাখ টাকা। এদিন কবি মোহাম্মদ রফিককে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত দ্বিবার্ষিক পুরস্কার ‘কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’ প্রদান করা হয়। এ পুরস্কারের মূল্যমান ২ লাখ টাকা।

সমাপন অনুষ্ঠানে ২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণগতমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনীকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়।

২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিক রচিত ‘বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকস, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ রচিত বাংলা একাডেমি ‘আমার বাংলা একাডেমি’ বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমান রচিত ‘ঠার : বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩’ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ‘ময়ূরপঙ্খিকে’ ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করা হয়।

২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে নান্দনিক সেরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ‘পুঁথিনিলয়’ (প্যাভিলিয়ন), ‘নবান্ন প্রকাশনী’ (২-৪ ইউনিট) ও ‘উড়কি’কে (১ ইউনিট) শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নান্দনিক আলোকসজ্জায় শেষ হয় এবারের বইমেলার আসর।

Manual8 Ad Code

মঙ্গলবার ছিল সেই মেলার শেষ দিন। এদিন বিকালে বইমেলা প্রাঙ্গণ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। শেষ বিকালে বই কিনে ঘরে ফেরার আনন্দে উদ্বেল ছিলেন পাঠক মেলা শেষ হয়ে গেলেও যেন এর রেশ রয়ে যাবে অগণিত পাঠকমনে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পাঠক তাদের পছন্দের বইটি কিনে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন মেলা প্রাঙ্গণে
এবারের মেলা নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘কোভিড মহামারি-পরবর্তীকালে মাসব্যাপী আয়োজন সত্যিই আমাদের জন্য একটি বড় সফলতা। বিন্যাস ও আঙ্গিকগত দিক নিয়ে এবারের মেলা সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

Manual6 Ad Code

প্রথমার প্যাভিলিয়নে কথা হয় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০২১ ও ২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে মেলাটি বেশ ভালো হয়েছে। তবে মেলা আয়োজনে সরকারকে আরও বেশি সহযোগিতা করতে হবে।

মেলার সমাপন অধিবেশনে বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা আমাদের জাতীয় জীবনে বড় একটি দিগন্ত। বই পাঠের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে মানবিক দর্শন জাগ্রত হবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ বছরের বইমেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’ মেলা প্রাঙ্গণে আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, ‘মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে প্রতিবছরই একটি ইস্যু নিয়ে আমরা কথা বলি, সেটি ধুলো। মেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ছিটানোর কথা থাকলেও আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। মেলার নান্দনিকতার দায়িত্বে থাকা ক্রসওয়াক কমিউনিকেশনস লিমিটেডের ব্যর্থতাও নজিরবিহীন।’
সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

শেয়ার করুন