৭ মাসে শাবির অবকাঠামোগত উন্নয়নে দৃশ্যমান পরিবর্তন
২৩ এপ্রি ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ণ


শাবি প্রতিনিধি :
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর ৭ মাসে অবকাঠামোগত উন্নয়নে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)।
অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প ২য় পর্যায়ের আওতায় বড় কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনের সংকট দ্রুত উত্তরণ করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আবাসিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শাহপরান হলের পাশে ১০তলা বিশিষ্ট ছাত্র ও বেগম সিরাজুন্নেসা ছাত্রী হলের পাশে ১০তলা বিশিষ্ট আরেকটি ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ১০০০ আসন বিশিষ্ট এই দুটি হল নির্মাণ হলে আবাসিক সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে।
আবাসিক হলের পাশাপাশি শুরু হয়েছে ১০ তলা বিশিষ্ট ১টি প্রশাসনিক ভবন ও ২টি অ্যাপ্লইড সায়েন্স অ্যাকাডেমিক ভবনের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি বিল্ডিংয়ের পশ্চিমে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে ৪তলা বিশিষ্ট ১টি ছাত্র হল মসজিদ, ১১ তলা বিশিষ্ট একটি শিক্ষক-কর্মকর্তা কোয়ার্টার, ২তলা বিশিষ্ট ১টি সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপ, এককিলো রাস্তার দুই পাশে ২টি স্প্যান ব্রিজ ও ১টি পাওয়ার স্টেশনের কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান রয়েছে।
ফিজিক্যাল সায়েন্সের জন্য ১০তলা বিশিষ্ট ১টি অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও শাহজালাল ইউভার্সিটি স্কুল এন্ড কলেজের জন্য ১টি ৬তলা ভবনের কাজ শুরু করার জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে যা খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বিদেশি গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী ও ভিজিটিং এডজাংক ফেকাল্টিসদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক হোস্টেল নির্মাণের লক্ষ্যে ১টি ৭তলা ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রভোস্টসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক অবস্থান করে ছাত্র ছাত্রীদের কোয়ালিটি সার্ভিস নিশ্চিতের লক্ষ্যে ৪০ ইউনিটের ১টি আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পূর্বপাশে ১টি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনার কাজ, অ্যাগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্সেস এবং ম্যানেজমেন্ট এন্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাকাডেমিক ভবনের জন্য ১০তলা ১টি ভবন শীঘ্রই চুক্তি স্বাক্ষর করে কাজ শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৪ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার এর আওতাভুক্ত রয়েছে। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব ভবন নির্মাণ হলে প্রায় ৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার এর আওতায় আসবে যা ইতোমধ্যে একটি সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিন্ডিকেট সভায় উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট প্রসেসিং, এইচ আর এম, স্টুডেন্ট হল ম্যানেজমেন্ট ও লাইব্রেরি পরিচালনাসহ যুগোপযোগী সফটওয়্যার তৈরির বিষয়ে তদারকি করবে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ ও আপগ্রেডেশন প্রক্রিয়া ‘স্মার্ট রিক্রোটমেন্ট সফটওয়্যার’ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন হলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সিলেট কিংবা দেশ নয় আন্তর্জাতিকভাবে একটি আধুনিক উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে পরিচিতি পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাবিপ্রবিকে আমরা একটা সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আশাকরি কয়েক বছরের মধ্যে শাবিপ্রবি বিশ্ব অঙ্গনে খ্যাতি ছড়াবে।’