বিয়ানীবাজারে শিলাবৃষ্টি অব্যাহত: বহু পরিবার খোলা আকাশের নীচে
০৭ এপ্রি ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
গত কয়েকদিন থেকে অব্যাহত শিলাবৃষ্টিতে দূর্ভোগে পড়েছেন বিয়ানীবাজারের হত-দরিদ্র মানুষ। গত ৩১শে মার্চ রাতের আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক পরিবার এখনো খোলা আকাশের নীচে। স্মরণকালের ভয়াবহ সেই ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০ ভাগ টিনসেডের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিয়ানীবাজারের সবক’টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কোন না কোন টিনশেডের ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ওজনের এক একটি শিলা পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ টিনের ঘর ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমিও। উপজেলার শেওলা, চারখাই, লাউতা, তিলপাড়া ও দুবাগ ইউনিয়নের টিনের ঘর বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব এলাকার নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও রয়েছেন বিপাকে। অনেকে টাকার অভাবে এখনো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের খাসা গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম বলেন, তার টিনের ঘরের সবক’টি কক্ষে পানি পড়ছে। শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গেছে ঘরের চালা। বিষয়টি উল্লেখ করে অনুদানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করবেন বলে জানান তিনি। কসবা গ্রামের মৃত মইন উদ্দিনের স্ত্রী জানান, শিলাবৃষ্টিতে টিন ফুটো হয়ে যাওয়ায় বসতঘরে পানি পড়ছে। টিনেরও অনেক দাম। এখন সংসার কীভাবে চালাবো আর টিন কীভাবে লাগাবো।
এদিকে রোববার শিলাবৃষ্টির পর ঘন ঘন বৃষ্টিপাত এর মধ্যে থেমে থেমে হালকা ঘূর্ণিঝড় এবং শিলাবৃষ্টি মানুষের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় জ্বলেনি চুলো। মাহে রমজানের সেহেরি ও ইফতার অস্থায়ী চুলা তৈরি করে কোনোমতে রান্না করছেন।
শেওলা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় টিনের ঘরের একই অবস্থা। পুরো টিনের চাল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের বিছানা, আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহমুদুল হাসান এরশাদ জানান, আমার এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের ঘর টিনের। শিলাবৃষ্টিতে তাদের টিন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা আক্তার। তিনি সরজমিন পরিদর্শন করে একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে অনুদান প্রদান করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, সরকারি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও তিনি এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।