সরকারের কাছে ধান বিক্রি: ডিজিটাল বিড়ম্বনায় হয়রানির শিকার কৃষক

Daily Ajker Sylhet

admin

২৩ মে ২০২৪, ০৫:০১ অপরাহ্ণ


সরকারের কাছে ধান বিক্রি: ডিজিটাল বিড়ম্বনায় হয়রানির শিকার কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার:
মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় সরকার। অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকদের নিবন্ধন করানোর জন্য খাদ্য অধিদফতর থেকে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। ওই নির্দেশনায় এ বিষয়ে কৃষকদের সহায়তা করতে বলা হয়।

কিন্তু ধান বিক্রিতে এ্যাপের মাধ্যমে আবেদন, লটারীসহ নানা কারনে ডিজিটাল বিড়ম্বনায় পড়েছেন বিয়ানীবাজারের কৃষকরা। নানা দপ্তরে ঘুরে আবেদনের পর যখন লটারীতে তার নাম উঠছেনা, তখন ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। উর্দ্বৃত্ত ধান কী করবেন কিংবা কোথায় রাখবেন-এনিয়েও তাদের রয়েছে দু:শ্চিন্তা।

২০১৯ সালের নভেম্বরে কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে ধান বিক্রির জন্য নিবন্ধন ও ধান বিক্রির জন্য আবেদন নিতে শুরু করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদফতর। সরকারের পাইলট কর্মসূচির এই তালিকায় বিয়ানীবাজার উপজেলাও রয়েছে। প্রান্তিক কৃষকদের দকৃষকের অ্যাপে নিবন্ধনে আগ্রহী করতে প্রচার কার্যক্রম না থাকায় স্থানীয় অনেক কৃষকই বিষয়টি নিয়ে অবগত নয়। উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, এবার তারা কিছু ধান বিক্রির জন্য সরকারের স্থানীয় দপ্তরে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আবেদন, লটারীসহ নানা কথা তুলে ধরা হয়। কিন্তু সব কার্যক্রম শেষ করার পর তিনি যদি লটারীতে বিজয়ী না হন তাহলে ধান বিক্রি করতে পারবেননা বলে জানানো হয়। এটা কৃষকদের জন্য ডিজিটাল হয়রানি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

জানা যায়, ধান বা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে কৃষকের অংশ নিবিড়ভাবে কাজ করে। প্রথমে তারা নিবন্ধনের আবেদন করবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিবন্ধন আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিলে সংশ্লিষ্ট কৃষক ধান বিক্রির জন্য আবেদন করতে পারেন। আবেদন করার পর কৃষক নির্বাচনি লটারি অনুষ্ঠিত হয়। সেই লটারিতে নির্বাচিত হলে কৃষক ধান জমা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ আদেশ পাবেন। বরাদ্দ আদেশে উল্লেখ থাকে কী পরিমাণ ধান কোন এলএসডিতে (লোকাল সাপ্লাই ডিপো) সরবরাহ করতে হবে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অনুমোদনের পর কৃষক ব্যাংক থেকে তার টাকা বুঝে নেবেন। আগে কৃষককে ধান বিক্রি-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য উপজেলা অফিসে যেতে হতো। আর এখন কৃষক ঘরে বসেই সেসব তথ্য পেয়ে যাবেন। এছাড়াও এটি ব্যবহার করে কৃষক তার মতামত বা অভিযোগ জানাতে পারবেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যম অ্যাপ। কৃষক যাতে ঘরে বসে সহজে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করতে পারেন, সেজন্যই এটি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের কারিগরি সহযোগিতায় অ্যাপটি তৈরি করা হয়। কৃষক আবেদন করার পর আবেদনটি কী অবস্থায় আছে, সেটাও এই অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: লোকমান হেকিম বলেন, কৃষকের অ্যাপে খুব সহজে নিবন্ধন করা যায়। এরপরও যদি কেউ সেটি করতে না পারেন, তাহলেও সমস্যা নেই। আমাদের জানালে আমরা করে দেবো।’ বিয়ানীবাজার উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক (ওসি-এলএসডি) মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষকের তালিকা, কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সেই তালিকা অনুযায়ী সরকারী নীতিমালা মেনে আমরা ধান সংগ্রহ করি।

Sharing is caring!