বিয়ানীবাজারের উন্নয়ন প্রকল্পের অনিশ্চিত ভবিষ্যত

Daily Ajker Sylhet

admin

০৮ সেপ্টে ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ণ


বিয়ানীবাজারের উন্নয়ন প্রকল্পের অনিশ্চিত ভবিষ্যত

স্টাফ রিপোর্টার:
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর বিয়ানীবাজারের অনেক কিছু থমকে গেছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজও স্থিমিত হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক সংকট কাটানো ও রাজনৈতিক বিবেচনায় নেয়া অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প কাটছাঁট হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়তে পারে বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পেও। অন্তর্বর্তী সরকারের নীতির ওপর নির্ভর করছে স্থানীয় অনেক উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি। আওয়ামী লীগ সরকার এসব প্রকল্প তার দৃশ্যমান উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের টানা মেয়াদে উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। তবে নানা জঠিলতায় স্থানীয়ভাবে সেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। বিয়ানীবাজারের বেশির ভাগ উন্নয়ন প্রকল্পই শেষ হয়নি নির্দিষ্ট সময়ে। তিন বছর মেয়াদ থাকলেও কোনো প্রকল্পে লাগে পাঁচ বছর, কোনোটায় সাত বছর, আবার কোনোটায় ১০ বছর, তাও অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ করেননি সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক সিলেট শহরের কদমতলী থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন ৪২. ৯৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করতে গত ২৪শে জুলাই নোটিশ জারী করা হয়। চলতি বছরে শুরু হয়ে প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। সিলেট থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনের যাতায়াত সহজ করতে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ওই নোটিশে প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের পূনর্বাসনে তালিকা করার কথা উল্লেখ করেন প্রকল্পের পরিচালক খান মো: কামরুল আহসান।
বিয়ানীবাজার উপজেলায় জমি নির্ধারণ জটিলতায় থমকে আছে মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ। বারবার জমি নিয়ে জটিলতা তৈরী হওয়ায় এই প্রকল্পের কাজ শুরুই করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পৌরশহরের খাসা এলাকায় মসজিদ নির্মাণের জমি প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। এছাড়াও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প তৈরি করে তা ৪ ধাপে বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১২৫টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হয়েছে। চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ। সূত্র জানায়, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়ার পরই বিয়ানীবাজার উপজেলায় এটি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। তবে প্রায় এক দশকেও বিয়ানীবাজারে তা আলোর মুখ দেখেনি। উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের জায়গা না পাওয়ার অজুহাতে এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পটি থমকে আছে।
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে ১০তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে তৎকালীন সরকার। প্রকল্পের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও কবে তা শেষ হবে, কেউ বলতে পারছেনা। পৌরশহরের খাসায় চলমান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ আগামী বছর ওই প্রতিষ্টানে পাঠদান কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের টানা মেয়াদে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কিন্তু সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে তিনি সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়েন।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর চর খনন, ছয়টি শাখা, উপনদী ও খাল খনন, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ, নদীতীর প্রতিরক্ষা কাজসহ বেশ কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে বিবেচনাধীন আছে। সরকার ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই প্রকল্পগুলোর কী হবে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট করে কেউ কিছু জানাতে পারেনি। শেওলায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে চলমান। এই প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ।
সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন ও সিলেট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকেশৈলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: শামসুল আরেফিন খান জানান, প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে এখনো আমাদের কাছে কোন নির্দেশনা আসেনি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Sharing is caring!