জীবন সংগ্রামে হার না মানা পপি পেলেন বিয়ানীবাজারে জয়িতার পুরষ্কার
১১ ডিসে ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জীবন-সংগ্রামে হার না মানা বিয়ানীবাজারের এক নারী পেলেন ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা’র পুরস্কার। মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা, সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে এই পুরস্কার প্রদান করে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সফল নারীরা আমাদের প্রেরণা। আর নারীদের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বিজয়ী হতে হয়। তিনি বলেন, এখন নারীরা সকল অচলায়তন দূর করে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা সমাজের জন্য ভালো লক্ষণ।
এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলায় জেজি আক্তার পপি নামের এক নারী জয়িতা পুরষ্কার লাভ করেছেন। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যেমে জীবন শুরু করার প্রেরণা হিসেবে তাকে এ পুরষ্কারে এ ভূষিত করা হয়। উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের কাকরদিয়া এলাকার তেরাদল গ্রামের সেলিম উদ্দিনের মেয়ে তিনি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা পপির পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তার বড় ভাই। পেশায় বড় ভাই ছিলেন অটোরিকশা চালক। ২০০৯ সালে বেকার স্বামীর সাথে বিয়ে হলে তিনি এক সন্তানের মা হন। যদিও বেকারত্বের অভিশাপ তার স্বামীকে ঘিরে ধরে। মাদকসেবনসহ জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন পপির স্বামী। এনজিও থেকে ঋণ করে স্বামীকে ব্যবসা ও বিদেশ যাওয়ার টাকা দেয়ার পরও তাকে সুপথে ফেরাতে পারেননি তিনি। উপায় না পেয়ে স্বামীর সংসার ত্যাগ করেন।
ডেজি আক্তার পপি বলেন, জরুরী প্রয়োজনে একদিন স্থানীয় ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে শুনতে পান উপজেলায় পার্লার কাজের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ শুরু করেন তিনি। এ সময় তাকে অনেক অপবাদ সইতে হয়েছে। পার্লার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কেক তৈরীর কাজও আয়ত্ত করেন। এখন তিনি অর্ডার অনুযায়ী কেক বিক্রি করেন। দেড় বছর পর সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। বর্তমানে অন্যের সাথে শেয়ারে পার্লার ব্যবসা শুরু করেছেন। সুখ-শান্তিতে চলছে তার সংসার বলে তৃপ্তির হাসি দেন পপি।
জয়িতা পুরষ্কার প্রদান অনুষ্টানে অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মনিরুল হক খান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শামসুন নাহার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র নাথ দাস।