কিশোরীকে নিয়ে থানায় অপহরণকারীর মা, আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ
২৯ এপ্রি ২০২৩, ১২:৩১ অপরাহ্ণ
ধামরাই প্রতিনিধি:
ঢাকার ধামরাইয়ে এক কিশোরীকে (১৪) অপহরণের পর গোপন স্থানে ১৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে শুক্রবার রাত ৮টায় ওই অপহরণকারীর মা সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মেম্বার লাইলী বেগম অপহৃত কিশোরীকে নিয়ে ধামরাই থানায় আসেন।
কিছুক্ষণ পর কাকতালীয়ভাবে স্বেচ্ছায় থানায় এসে পুলিশের কাছে ধরা দেন শহিদুল ইসলাম (২৭) নামের ওই অপহরণকারী। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
শহিদুল ইসলাম ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের কাছৈর গ্রামের মহিলা মেম্বার লাইলী বেগম ও গরু ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের ছেলে। ২৭ বছরে তিনি এভাবেই ৫-৬টি বিয়ে করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনসহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে ধামরাই থানায় অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই অপহরণকারী ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শনিবার ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ২২ ধারার জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ঢাকা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হবে। সেই সঙ্গে ধর্ষককেও আদালতে সোপর্দ করা হবে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী ওই সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা বলেন, ১৫ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের কিশোরীকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডাউটিয়া এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রকাশ্যে অপহরণ করেন শহিদুল ইসলাম। এরপর তাকে একটি গোপন স্থানে আটকে রেখে ওই কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে কিশোরীর বাবা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ধামরাই থানায় ওই দিনই বিকালে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য অপহরণকারী শহিদুল ইসলামের মা সংরক্ষিন নারী আসনের মেম্বার লাইলী বেগমকে চাপ দেন।
এরপর ওই মহিলা মেম্বার শুক্রবার দিনগত রাত ৮টার দিকে অপহৃত কিশোরীকে ধামরাই থানায় নিয়ে এসে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. নজরুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। এর কিছুক্ষণ পরই স্বেচ্ছায় থানায় এসে ধরা দেয় ওই অপহরণকারী শহিদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে অপহৃতা কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়ে অপহরণের পরই আমি ইউপি সদস্য মন্টু মনিদাসকে সঙ্গে নিয়ে এসে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করি। পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আমি এতে খুশি। সেইসঙ্গে আমার মেয়ের সর্বনাশকারীর কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার মন্টু মনিদাস বলেন, অধিক তৎপরতার সঙ্গে মেয়েটিকে উদ্ধার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এসআই নজরুল। এর আগেও আমাদের গ্রামের একটি মেয়েকে এ পুলিশ কর্মকর্তা যশোর থেকে উদ্ধার করেছিলেন। আমার পুলিশি সেবায় অনেক আনন্দিত।
মহিলা মেম্বার লাইলী বেগম বলেন, পুলিশের কথা বিশ্বাস করে মনে করেছিলাম- ভিকটিমকে থানায় হাজির করে দিলে কোনো মামলা হবে না। এখন মহাবিপদের পড়ে গেলাম। জানি না আমার ছেলের ভাগ্যে কী হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, অপহরণকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ঢাকাস্থ ধামরাই জুডিশিয়াল আদালতে প্রেরণ করা হবে। সেই সঙ্গে অপহরণকারীকেও আদালতে পাঠানো হবে।