Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন বছর পর মায়ের সান্নিধ্যে শিশু সন্তান

admin

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ০১:১২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ০১:১২ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
তিন বছর পর মায়ের সান্নিধ্যে শিশু সন্তান

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
হাইকোর্টের রায় অমান্য করে তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবা পালান অস্ট্রেলিয়ায়। সেই অপরাধে তাকে দেওয়া হয়েছিলো ৬ মাসের জেল। সেই জেলের মামলায় দুই সপ্তাহ আগে আত্মসমর্পণ করে আপিল বিভাগে জামিন চান বাংলাদেশি বাবা শাহিনুর টিআইএম নবী। তখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ উচ্চ আদালতের রায় মেনে আগে সন্তানকে মায়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।

সেই নির্দেশ অনুযায়ী আজ সকালে মা অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দরাবাদের সাদিকা সাঈদ শেখের কাছে শিশু সন্তানকে হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর পর শিশুটি তার মায়ের সান্নিধ্য পেল। সকাল ১০ টায় মামলাটি শুনানি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মায়ের কোলেই বসে ছিলো শিশুটি। আর মাঝে মাঝে মায়ের বুকে মুখ লুকাচ্ছিলেন।

Manual1 Ad Code

সেই সন্তানের জন্যই ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে চান মা। মা সাদিকা শেখ বলেন, ‘তিন বছর পর আমি আমার বাচ্চাকে কাছে পেলাম। সন্তানকে কাছে পাওয়ার এই অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করকে পারছি না। এজন্য তিনি আদালত, আইনজীবী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার সন্তান বাংলাদেশি। আমার সন্তানের জন্য ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে এদেশেই থাকব।’

এদিকে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সন্তানের পিতা শাহিনুরকে জামিন দেন। একইসঙ্গে সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখার আদেশ প্রদান করেন। তবে বাবা সপ্তাহে দুই দিন বেলা ৯ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নের্তৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

মায়ের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে আইনি সহায়তা দেয় ফাউন্ডেশন ফর ল এন্ড ডেভোলপমেন্ট (ফ্লাড)। এরপর সন্তানকে কাছে পেতে রিট করেন তিনি। ওই রিটের প্রেক্ষিতে সন্তানকে মায়ের হেফাজতে দিতে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু হেফাজতে না দিয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করে সন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান বাবা। পরে আদালতের আদেশ লংঘনের অভিযোগে শাহিনুরকে ছয় মাসের জেল দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর এ রায় দেয়া হয়।

Manual8 Ad Code

এই রায়ের দুই বছর পর গত ২৩ আগস্ট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন শাহিনুর। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিন চান আপিল বিভাগে। আজ শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত।

Manual6 Ad Code

প্রসঙ্গত, বিয়ে সংক্রান্ত ভারতীয় একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অন্ধপ্রদেশের হায়দরাবাদের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান সাদিকা সাঈদ শেখকে পছন্দ করেন বারিধারার ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনূর টিআইএম নবী। ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে তাদের বিয়ে হয়। এরপর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন।

২০১৮ সালে পুত্রসন্তানের মুখ দেখে এই দম্পতি। কিন্তু একপর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। ভারতে মেয়েটির আত্মীয়স্বজনরা এসব ঘটনা জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি।

Manual1 Ad Code

পরে গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশুসন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট জমা দেন ফ্লাড পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী। এদিকে হাইকোর্টে মামলা দায়েরের পরপরই স্ত্রীকে তালাক দেন বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনূর টিআইএম নবী।

শেয়ার করুন