যেভাবে তৈরি অস্কারজয়ী ‘নাট্টু নাট্টু’ গানটি
১৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ণ
বিনোদন ডেস্ক:
তেলেগু সিনেমা আরআরআর-এর বিখ্যাত গান ‘নাট্টু নাট্টু’ ৯৫তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে মৌলিক গান ক্যাটাগরিতে অস্কার অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
অ্যাকাডেমির অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে করা এক টুইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ‘নাট্টু নাট্টু’ সেরা অরিজিনাল গানের জন্য গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল।
‘নাট্টু নাট্টু’ আরআরআর সিনেমার একটি গান, যে গানটি শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক, সব বয়সী মানুষই পছন্দ করেছে। গানটি সিনেমাপ্রেমীদের মন জিতে নিয়েছে।
‘নাট্টু নাট্টু,’ হিন্দিতে যার অর্থ নাচো নাচো, গানটিতে নাচতে দেখা যায় যায় অভিনেতা এনটিআর ও রাম চরণকে। সেই সঙ্গে সিনেমার পরিচালক রাজামৌলি যে ট্রিটমেন্ট গানটিকে দিয়েছেন তা একে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে।
কিন্তু গানটি কিভাবে তৈরি হলো?
এই গানটি পর্দায় আনার আগে সিনেমার পরিচালক এস.এস. রাজামৌলি, সঙ্গীত পরিচালক কিরাভানি এবং গীতিকার চন্দ্রবোসের মনে কী চলছিল?
মৌলিক গান ক্যাটাগরির অর্থ কি?
‘নাট্টু নাট্টু’ গানটি কিভাবে এলো তা জানার আগে জেনে নেওয়া যাক ‘অরিজিনাল সং’ বা ‘মৌলিক গান’ ক্যাটাগরির অর্থ কী।
কোনো সিনেমার জন্য বিশ্বের যে কোনো ভাষায় যে গানটি ব্যবহার করা হচ্ছে তা যদি আগের কোনো গানের কপি না হয়, তাহলে সেটি ‘অরিজিনাল’ বা মৌলিক।
এর অর্থ এও যে সেই গানে আগের কোনও গান, সুর, বিষয়বস্তু বা অর্থের কোনো প্রভাব নেই।
যেভাবে তৈরি ‘নাট্টু নাট্টু’
‘নাট্টু নাট্টু’ শব্দ থেকে বোঝা যায় এটি একটি ‘গণসঙ্গীত’।
এস এস রাজামৌলি মনে রেখেছিলেন, এনটিআর জুনিয়র এবং রাম চরণ দুজনেই তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেরা নৃত্যশিল্পী। দুজনেই নিজেদের মতো করে এ পর্যন্ত বহুবার নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন। দুজনকে একসঙ্গে নাচতে দেখা গেলে সম্ভবত ভালো হবে। তাদের একসঙ্গে পারফর্ম করতে দেখলে দর্শকের আনন্দ ও অনুভূতি সম্পূর্ণ নতুন মাত্রায় যেতে পারে।
রাজামৌলি সিনেমার মিউজিক ডিরেক্টর এম এম কিরাভানির সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন।
কিরাভানি বলেন, রাজামৌলি আমাকে বলেছিলেন, বড় ভাই, আমি এমন একটি গান চাই যেখানে এ দু’জন (এনটিআর জুনিয়র এবং রাম চরণ) একে অপরকে টক্কর দিয়ে নাচ করবে।
এরপর গান লেখার জন্য কিরাভানি বর্তমান তেলুগু চলচ্চিত্রের গীতিকারদের মধ্যে থেকে চন্দ্রবোসকে বেছে নেন।
কিরাভানি চন্দ্রবোসকে বলেছিলেন, গানের কথাগুলো এমন হওয়া প্রয়োজন যাতে দু’জন তাদের আবেগ দিয়ে নাচতে পারেন। আপনি আপনার সুবিধা মতো লেখেন, শুধু মনে রাখবেন সিনেমাটা ১৯২০ সালে ঘটে যাওয়া ঘটনা ঘিরে আবর্তিত। সুতরাং গানে শব্দের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
গানটি কিভাবে তৈরি করা হলো?
রাজামৌলি, কিরাভানি এবং চন্দ্রবোস ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে গানটি নিয়ে কাজ শুরু করেন।
চন্দ্রবোস তার গাড়িতে বসার সঙ্গে সঙ্গেই রাজামৌলি ও কিরাভানির নির্দেশ তার মনে ঘুরতে শুরু করে। গাড়িটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানা থেকে জুবিলি হিলসের দিকে যাচ্ছিল। তার হাত স্টিয়ারিংয়ে ছিল, কিন্তু মন ছিল গানের কথার দিকে। তখনই গানের হুক লাইন তার মাথায় আসে।
‘নাট্টু নাট্টু’ এমন একটি গান যেখানে অভিনেতারা তাদের নাচের দক্ষতা দেখিয়েছেন।
দুই দিনে গানটির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে যায়। তবে টুকটাক নানা কাজের জন্য আরও ১৯ মাস সময় লেগে যায়।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র
সিনেমায় ভিম (জুনিয়র এনটিআর) চরিত্রটি তেলেঙ্গানার এবং রাম (রাম চরণ) চরিত্রটি অন্ধ্রপ্রদেশের। সে বিষয়টা মাথায় রেখে গানটিতে দুই অঞ্চলের ১৯২০-এর দশকের ভাষা থেকে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
তেলুগু ভাষায় প্রচলিত অনেক লোককাহিনীর চরিত্রও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এ গানের মাধ্যমে। গানটি গেয়েছেন কালভৈরব ও রাহুল সিপলিগঞ্জ।
‘নাট্টু নাট্টু’ গানটিতে এনটিআর এবং রাম চরণ উভয়েই তাদের নাচের দক্ষতার পরীক্ষা দিয়েছেন। কোরিওগ্রাফার প্রেম রক্ষিত এই গানের জন্য প্রায় ৯৫টি স্টেপ তৈরি করেছিলেন।
গানটি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের পটভূমিতে চিত্রায়িত হয়েছিল।