Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদকে সামনে রেখে জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ভারতীয় পণ্য

admin

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৩ | ০৭:৩৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ | ০৭:৩৯ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
ঈদকে সামনে রেখে জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ভারতীয় পণ্য

Manual5 Ad Code

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিটি সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভারতের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিল, আমদানী নিষিদ্ধ বিড়ি, সিগারেট, শাড়ি, লেহেঙ্গা, মোবাইল হ্যান্ডসেট, নিম্ন মানের চা-পাতা, গাড়ির টায়ার-টিউব সহ যন্ত্রপাতি, মটর সাইকেল, ভারতীয় চিনি ও গরু মহিষ।

 

Manual2 Ad Code

ব্যবসায়ীরা বলেন, মোটা অংকের টাকা সালামির মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে এসব ভারতীয় পণ্য এবং গরু-মহিষ। সংশ্লিষ্টদের ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত অতিক্রমের কোনো সুযোগ নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

Manual7 Ad Code

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার ৪৮ বিজিবির আওতাধীন আলুবাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, কেন্দ্রী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ডিবিরহাওর, ডিবিরহাওর(আসামপাড়া) এবং ১৯ বিজিবির আওতাধীন ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, মাঝেরবিল, কালিঞ্জি, জালিয়াখলা, অভিনাশ ও লাল মিয়ার টিলা, তুমইর, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, বালিদাঁড়া, ইয়াংরাজা এলাকা দিয়ে পালাক্রমে দিনের বেলায় বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় পণ্য সামগ্রী।

 

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সীমান্ত জুড়ে অবাধে চলে চোরাকারবার সাথে সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা। ভারত থেকে কেউ নেয়ে আসছেন গরু-মহিষ, দামী শাড়ী, কেউবা আনছেন মাদক, আর কেউবা চা-পাতা, কসমেট্রিক্স-এর চালান।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চোরাকারবারী দলের সদস্যরা বলেন, সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সাথে লিয়াজো করে ভারতীয় পণ্যের চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। প্রতিনিয়ত সীমান্তের বিভিন্ন পথ ব্যবহার করে বীরদর্পে চলছে চোরাচালানের নিরাপদ বাণিজ্য। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের সালামি পৌঁছে যাচ্ছে নানা মহলে। তিনি আরও বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) যত লেখালেখি করবেন তত বেশি সালামি দিতে হয়। মাঝে মধ্যে বড় বড় চালান প্রবেশ করাতে গিয়ে লিয়াজো চাইতে বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।

 

Manual3 Ad Code

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব সিলেটের সর্বোচ্চ চোরাচালানের নিরাপদ রুট জৈন্তাপুর। প্রতিদিন সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে হাজার হাজার বস্তা ভারতীয় চিনি, কসমেট্রিক্স, নিম্ন মানের চা-পাতা, ঔষধ সামগ্রী, মোবাইল হ্যান্ডসেটের বড় চালান, মাদকের চালান, শাড়ী ও লেহেঙ্গার চালনা।

Manual7 Ad Code

 

এদিকে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম, সহকারি কমিশনার (এসিল্যান্ড) রিপামনি দেবী, জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ, ১৯ বিজিবি জৈন্তাপুর (রাজবাড়ী) ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে গত ২ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা হতে ভোর ৫টা পর্যন্ত উপজেলার ঘিলাতৈল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩১০ বস্তা ভারতীয় চিনি আটক করা হয়। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে আনা টাস্কফোর্সের অভিযানে উদ্ধারকৃত ৩২০ বস্তা চিনি গত ৫ জুন সোমবার বিকাল ৪টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২দফায় ১৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় কাস্টম কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রয় করা হয়।

 

টাস্কফোর্সের অভিযান এর পর হতে উপজেলার ডিবিরহাওর, ডিবিরহাওর আসামপাড়া, ঘিলাতৈল, ফলবাড়ী, টিপরাখলা, গোয়াবাড়ী এলাকা দিয়ে চেরাচালান বন্ধ রাখা হয়। অপরদিকে ৪৮ বিজিবির আওতাধীন আলুবাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, কেন্দ্রী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ১৯ বিজিবির আওতাধীন বাইরাখেল, হর্নি, মাঝেরবিল, কালিঞ্জি, জালিয়াখলা, অভিনাশ ও লাল মিয়ার টিলা, তুমইর, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, বালিদাঁড়া, ইয়াংরাজা এলাকা দিয়ে পালাক্রমে দিন ও রাতে ভারতীয় পণ্য সামগ্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

 

এবিষয়ে শ্রীপুর, মিলাটিলা, ডিবিরহাওর, জৈন্তাপুর এবং লালাখাল ক্যাম্পের দায়িত্বশীলরা বলেন, সীমান্তে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে বিজিবি বিপুল পরিমাণ চিনি ও শাড়ি আটক করা হয়েছে। এরপরও চোরাকারবারীরা নানা পন্থায় চুরির মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বিজিবি সীমান্ত রক্ষায় নিরলস চেষ্টা চালিয়ে বিজিবির পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন টাস্কফোর্স গঠন করায় যত দ্রুত সম্ভব চোরাচালান জিরো টলারেন্সে নামিয়ে আসবে।

 

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক মোড়ল কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। পরে এসএমএস-এর মাধ্যমে মতামত চাইলে তার কাছ থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

 

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া আমাদের গঠিত টাস্কফোর্স বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের অভিযানে ৩২০ বস্তা ভারতীয় চিনি আটক করে ১৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রয় করা হয়েছে। উপজেলা চোরাচালান বন্ধে টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

শেয়ার করুন