Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খুনের বিচার এগোয়নি, পাঁচ বছরে এসে ‘রেড নোটিশ’

admin

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৩ | ০১:১৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ | ০১:১৪ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খুনের বিচার এগোয়নি, পাঁচ বছরে এসে ‘রেড নোটিশ’

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যাকাণ্ডের বিচারে অগ্রগতি নেই। ঘটনার চার বছর আট মাস পার হলেও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে মাত্র একজনের। আর পুলিশ এত দিন পর এসে মামলার শুরু থেকে পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের নামে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিশ’ জারি করাতে পেরেছে।

রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। গত সপ্তাহে আরাভ জুয়েলার্স নামে দুবাইয়ে সোনার বড় দোকান চালু করে বাংলাদেশে আলোচনায় আসেন তিনি।

গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন বলেন, ‘একটু আগে আমার কাছে খবর এসেছে, ইন্টারপোল এটি (রেড নোটিশ) গ্রহণ করেছে। এখন বাকি কাজ তারা করবে।’

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খুন হন ২০১৮ সালের ৮ জুলাই। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তাঁর আধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় খুনের মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পলাতক রবিউলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার নথিপত্র বলছে, ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের প্রযোজককে বনানীর একটি বাসায় ডেকে নেন আসামিরা। সেটি ছিল রবিউলের কথিত অফিস। ওই প্রযোজকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন। তিনি প্রযোজকের ডাকে ঘটনাস্থলে যান। একপর্যায়ে মামুনকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ গোপন করার জন্য বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের জঙ্গলে। পরিচয় যাতে শনাক্ত না করা যায়, সে জন্য মরদেহ পোড়ানোও হয়।

মামলার অভিযুক্ত আসামি ১০ জন। এদের মধ্যে দুজন কিশোরী। রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ও তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। মামুন হত্যার ঘটনায় লাশ গোপন করতে সহায়তা করেছেন রবিউল। খুনে সরাসরি জড়িতরাও রবিউলের সহযোগী।

Manual4 Ad Code

মামলাটিতে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন রবিউলের স্ত্রী সুরাইয়া। কারাগারে রয়েছেন আসামি রহমত উল্লাহ (৩৫), স্বপন সরকার (৩৯), দীদার পাঠান (২১), মিজান শেখ (২১), আতিক হাসান (২১) ও সারোয়ার হোসেন (২৩)।

মামলাটিতে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এরপর ২০২২ সালের ২৮ জুলাই মামলায় একজন সাক্ষীকে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন। সেটি বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল সাত্তার দুলাল বলেন, সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

ডিবি জানিয়েছে, মামুন খুনের পর দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান। এদিকে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সম্পর্ক রয়েছে বলে কথা উঠেছে।

এরপর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি রবিউলকে চেনেন না, তাঁর সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়ও নেই।

Manual1 Ad Code

বিষয়টি নিয়ে গতকাল চট্টগ্রামে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রবিউলের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন সাবেক কোনো কর্মকর্তার সম্পর্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপযুক্ত সময়ে তা জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ হত্যা মামলায় যে নামে চার্জশিট হয়েছে, সেই নামে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইন্টারপোল সেটি গ্রহণ করেছে।

দুবাইয়ে রবিউলের দোকান উদ্বোধনে এক ঝাঁক তারকার যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে দেখা করতে তারকারা কেন গেছেন, নিশ্চয় তাঁরা বলবেন। আপনাদের সঙ্গেও তাঁদের দেখা হবে। আমরাও এটা খবর নেব।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় একজন একটা বিজ্ঞাপনের জন্য যায়, অনুষ্ঠানে যায়। একটা অনুষ্ঠানে গেলেই যে তাঁর সঙ্গে জড়িত থাকবে, সেটা কি বলা যায়? এরপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি বিষয়টা।’

Manual6 Ad Code

 

Manual6 Ad Code

শেয়ার করুন