Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮ মাসে সড়ক ঝড়েছে ৩৩১৭ প্রাণ!

admin

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০২:২৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০২:২৫ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
৮ মাসে সড়ক ঝড়েছে ৩৩১৭ প্রাণ!

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত (৮ মাসে) ৩ হাজার ৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১৭২ জন।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল রুমে রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। কোয়ালিশনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর হিসেবে, দেশে ৩ হাজার ৫৬২টি দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৭ জন। আর আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১৭২ জন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ স্বীকৃত ‘সেইফ সিস্টেম এপ্রোচ’ (নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থাপনা) এর সমন্বয়ে একটি পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

Manual7 Ad Code

নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ‘সেইফ সিস্টেম এপ্রোচ’ ব্যবহার করে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানসম্মত কোনো গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ না করায় আমাদের দেশে সরকারি দু’টি সংস্থার হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যার অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশে ৫০৮৯টি রোডক্র্যাশে ৫৬৩৬ জন নিহত এবং ৪৪৪৪ জন আহত হয়। আর ২০২১ সালে ৫৪৭২টি রোডক্র্যাশে ৫০৮৪ জন নিহত এবং ৪৭১৩ জন আহত হয়। নিসচা-এর তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশে ৭০২৪টি দুর্ঘটনায় ৮১০৪ জন নিহত এবং ৯৭৮৩ জন আহত হয়। আর ২০২১ সালে ৪৯৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮৯ জন নিহত এবং ৫৮০৫ জন আহত হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরেও রোডক্র্যাশের সার্বিক হার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। অথচ এই সকল অনাকাঙ্খিত মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য, কিন্তু এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলে কতটা আন্তরিক প্রশ্ন থেকে যায়।

Manual8 Ad Code

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র চেয়ারম্যান বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য উন্নত দেশগুলো সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিজেদের আইনি ও নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও এর যথাযথ বাস্তবায়নে সুফল পেয়েছে। তারপরও আমাদের বর্তমান আইনি ও নীতি কাঠামোতে এই দর্শন সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। তবে আশার কথা হলো, বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় গৃহীত বাংলাদেশ রোড সেইফটি প্রকল্পে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের কিছু ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমরা এই বিজ্ঞানভিত্তিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি, সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়কের জন্য আলাদা আইনি কাঠামোর জোর দাবি জানাই।

Manual5 Ad Code

তিনি আরও বলেন, আমাদের বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়কে পরিবহনের জন্য আইন এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধিমালা। তাই পরিবহন ব্যবস্থাপনার জন্য তৈরি এই আইনে সাম্প্রতিক সংশোধনীর সময়ে গতি নিয়ন্ত্রণ, হেলমেট ও সিটবেল্টের মতো কিছু বিষয় সংযোজন করা হলেও তা সড়কে রোডক্র্যাশের কারণে মানুষের মৃত্যু ও বড় ধরনের আঘাত থেকে রক্ষার করার জন্য পর্যাপ্ত নয়।

Manual3 Ad Code

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সুতরাং সড়কে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত আলাদা আইন প্রণয়ন ও এর যথাযথ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই নীতি নির্ধারণ পর্যায়ের সকলের আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।

শেয়ার করুন