Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনশনে বসা দুজনকেই বিয়ে করবেন সেই শাহীন, তরুণীদের মতামত কী?

admin

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
অনশনে বসা দুজনকেই বিয়ে করবেন সেই শাহীন, তরুণীদের মতামত কী?

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে শাহীন নামে এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে একসঙ্গে দুই তরুণী অনশনে বসেছেন। এ নিয়ে দুজনকে বিয়ে করতে কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন শাহীন।

Manual2 Ad Code

শনিবার (২ নভেম্বর) রাত ৭টায় সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের গাগান্না গ্রামের ইকরামুলের ছেলে শাহীনের বাড়িতে অনশন শুরু করেন দুই তরুণী।

Manual3 Ad Code

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শনিবার বিকেল থেকে এক কলেজশিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে শাহীনের বাড়িতে অবস্থান নেন। কলেজশিক্ষার্থীর দাবি, শাহীন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তার সঙ্গে প্রেম করে আসছেন। তাদের দুই পরিবার এই বিয়েতে রাজি ছিল। কিন্তু সে ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ায় তার পরিবার এই বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর কলেজশিক্ষার্থীর অনুমতি ছাড়া অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে গেলে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে শাহীনের বাড়িতে ওঠেন।

অন্যদিকে গত দুই মাস থেকে আরেক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন শাহীন। প্রেমিকের বিয়ের কথা শোনার পর ওই তরুণীও বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে আসেন। এ ঘটনায় শাহীন ও তার পরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর দাবি, শাহীন দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত। এর আগেও এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণসহ একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এলাকাবাসী এর একটা সমাধান চায়।

শাহীনের প্রতিবেশী সোহেল বলেন, শনিবার বিকেল ৫টায় এক তরুণী বিয়ের দাবিতে শাহীনের বাড়িতে আসেন। এ কথা শুনে আরেক তরুণী বিয়ের দাবিতে তার বাড়ি আসেন। ওই দুই মেয়ের দাবি, শাহীন তাদের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেম করে আসছেন। এখন দুই মেয়েই শাহীনকে বিয়ে করতে চায়। এ নিয়ে সমাজের সবাই দ্বিধায় পড়েছেন যে কাকে রেখে কার সঙ্গে বিয়ে দেবেন।

Manual4 Ad Code

প্রতিবেশী ইছাহক মণ্ডল জানান, শাহীন ছেলে হিসেবে বেশি ভালো না। তার বিরুদ্ধে নারী সম্পৃক্ততার অনেক অভিযোগ। সমাজের কিছু লোক অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে এর কোনো বিচার করেন না। যে মেয়েরা আসছে তাদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে।

ফজলু মণ্ডল নামে আরেক ব্যক্তি জানান, এই ছেলে এবং ছেলের পরিবারের যে কার্যকলাপ দেখছি, সেগুলো সম্পূর্ণ অশ্লীল এবং বেহায়াপনা। সমাজের মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন তারা। এই ছেলে আগেও অনেক খারাপ কাজে জড়িত ছিল। আজ আবার একই সঙ্গে দুই মেয়ে বিয়ের দাবি নিয়ে এই বাড়িতে উঠেছে। আমরা গ্রামের মানুষ এর একটা সঠিক বিচার চাই।

বিয়ের দাবিতে অনশন করা কলেজশিক্ষার্থী বলেন, শাহীনের সঙ্গে আমার দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক। আমাদের বিয়েতে দুই পরিবারই রাজি ছিল। কিন্তু শাহীন ধর্ষণ মামলায় আসামি হওয়ায় আমার পরিবার আর মেনে নেয়নি। শুক্রবার আমার বিয়ের জন্য পরিবার থেকে চাপ দেয়। আমি শাহীনকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করব না। এ কারণে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তাই আমি শাহীনের বাড়িতে এসেছি। আমি ওকেই বিয়ে করব। শাহীন যদি ওই মেয়েকে বিয়ে করে, তাও আমার কোনো সমস্যা নেই।

অনশন করা আরেক তরুণী বলেন, শাহীনের সঙ্গে দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক। এর আগে শাহীন আমাকে বিয়ের জন্য তার বাড়িতে আসতে বলে। আমি বাড়ি থেকে তার বাড়িতে আসি। তখন শাহীনের বাড়ির লোকজন ঝামেলা করায় সেদিন বিয়ে হয়নি। আজ আবার শাহীনের বাড়িতে আরেক মেয়ে বিয়ের দাবিতে এসেছে। আমি তো ওকে ভালোবাসি। শাহীন আমাকে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছে। আমাকে রেখে এখন আবার অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। তাই আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য শাহীনের বাড়িতে এসেছি।

Manual7 Ad Code

এ বিষয়ে শাহীন বলেন, আমাকে বিয়ে করতে যে দুই মেয়ে আসছে, তাদের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল, এখন নেই। তবে তারা যেহেতু আমাকে বিয়ে করতে বাড়িতে চলে আসছে, তাদের দুজনকে বিয়ে করতে কোনো আপত্তি নেই। আমি দুজনকেই বিবাহ করতে রাজি আছি।

হলিধানী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার বলেন, গাগান্না গ্রামের শাহীনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে একই সঙ্গে দুই মেয়ে এসেছে এটা খুবই দুঃখজনক। সামাজিকভাবে আমরা এমনটা প্রত্যাশা করি না। ওই ছেলের সঙ্গে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে যে কোনো একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ওই সমাজের লোকজন। শিগগিরই এর সমাধান করা হবে।

শেয়ার করুন