Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে বিয়ে করলেন নোটিশ পাওয়া সেই শিক্ষক

admin

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৪:৪০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৪:৪০ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
অবশেষে বিয়ে করলেন নোটিশ পাওয়া সেই শিক্ষক

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্যপালের মেয়ে স্বর্ণা পালের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন রনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের পরিবারের লোকজন ছাড়াও রনির স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Manual1 Ad Code

চলতি বছর ২৬ জুলাই সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পালকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে নোটিশ দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। অবতারণা হয় হাস্য-পরিহাসের। এরপর নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেওয়ায় ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত শুরু হয়, যা এখনও চলছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক ছাড়া সাবেক শিক্ষকসহ স্থানীয়রা মানববন্ধনও করেন।

এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক রনি ও স্বর্ণার আশীর্বাদ হয়। সবশেষ শুক্রবার রাতে জাঁকজমকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

Manual7 Ad Code

রনির বড় ভাই রানা পাল বলেন, ‘দু’পক্ষের সম্মতিতে রনি ও স্বর্ণার বিয়ে ঠিক করা হয়। তারা দুজনই খুশি। সনাতন ধর্মের রীতি অনুসরণ করে বিয়ে করতে হয়, তাই তার বিয়েতে দেরি হয়েছে। আমরা ওই ঘটনার আগে থেকেই পারিবারিকভাবে বিয়ে করাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের রীতিনীতির সঙ্গে পড়েনি বলে এত দেরি হলো। অবশেষে বিয়ে হয়েছে।’

বর রনি প্রতাপ পাল বলেন, ‘কোনো চাপে নয়, পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করতে এসেছি। মূলত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ঢাকতে আমাকে বিয়ে করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ দেওয়ার আগে থেকেই বিয়ের জন্য পাত্রীর সন্ধানে ছিল পরিবারের লোকজন। কিন্তু সময়মতো পাওয়া হয়নি। এখন আর স্যার আমাকে এই কথা বলতে পারবে না। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক শোকজ অবস্থায় আছেন। আমি স্যারকেও বৌভাতের দাওয়াত দিয়েছি। আমাদের আগামী দিনের জন্য সবার কাছে আশীর্বাদ চাই।’

Manual8 Ad Code

কনে স্বর্ণা পাল বলেন, ‘আমি রনি প্রতাপকে বিয়ে করে অনেক খুশি। পরিবারের লোকজনের কাছে শুনেছি- তিনি অনেক ভালো মানুষ। তার সঙ্গে আমি সুখী হবো আশা করছি।’

এছাড়া রনির সহকর্মী ও সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ বলেন, ‘রনি স্যারের বিয়ে হওয়াতে আমরা অনেক খুশি’।

২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে স্কুলটিতে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। এরপর চলতি বছর ২৬ জুলাই তাকে নোটিশ দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। নোটিশে বলা হয়, ‘স্কুলে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিয়ে করতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কয়েক বছর পার হওয়ার পরও আপনি বিয়ে করেননি। স্কুলটিতে সহশিক্ষা চালু আছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং স্কুলের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করে কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য আপনাকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হলো।’

নোটিশটি পাওয়ার দুই দিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এ দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গোত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায় শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করেন না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণে আমার অভিভাবকেরা আমাকে বিয়ে করাবেন বলে জানিয়েছেন।’

Manual1 Ad Code

শেয়ার করুন