‘‘আত্ম সমালোচনা’’
২৯ মে ২০২৩, ০২:০৭ অপরাহ্ণ
এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন:
সমালোচনা করা প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্ক মানুষের নিজে নিজেকে চিনা ও জানার জন্য কর্তব্য। অন্যের ও সমালোচনা করা যাইতে পারে। তবে অন্যের সমালোচনা করতে হলে, তার ভালো দিকটি বা গুণটি অন্যের নিকট আলোচনা করা উত্তম। এখান থেকে খারাপ লোকটি শিক্ষা নিতে পারে। খারাপ দিকটি পরিহার করে চলা উচিত। কেননা, পরনিন্দা খারাপ চিন্তা।
একজন মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন জ্ঞান-বুদ্ধি, সুস্থমস্তিষ্ক, হাত, পা, চোখ, নাক, কান সহ প্রতিটি অঙ্গঁ প্রত্যক্ষ দিয়ে। স্বাভাবিক ও সুন্দর সুদর্শন মানুষ হিসাবে। পক্ষান্তরে জন্মগত ভাবে কেহ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি, চোখ, কান, পা নাই ইত্যাদি সবই তো করেছেন সৃষ্টিকর্তা। এখান থেকে শিক্ষা নিলেই তো সুস্থ মানুষটি অসুস্থ ও পথভ্রষ্ট চিন্তা চেতনা থেকেই শুকরিয়া আদায় করতে পারেন।
আলহামদুলিল্লাহ্!! সুস্থ মানুষটির প্রতিটি অর্গান স্বাভাবিক ভাবে কর্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু অসুস্থ মানুষটি কোন অঙ্গই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলে না।
উদাহরন স্বরুপ বলতে চাই, কাহারও যদি একদিন প্র¯্রাব বা পায়খানা স্বাভাবিক ভাবে না হয়, তাহলে তার মধ্যে যে অস^স্থি বোধ তৈরী হবে, তা দূর করতে কোটি টাকা দিয়ে কি দূর করা সম্ভব? না, কিছুতেই না। এখন থেকে কি উপলব্বি করা যায় না? যুগলের সহকায়ী প্রতিষ্ঠতা অতিরিক্ত ঠাÐা লেগে তার গলার স^রটি বন্ধ হয়ে গেল। ধারনা ছিল, আমার তো হাজার হাজার কোটি ডলার আছে। ভাল চিকিৎসা করলেই তো সুস্থ হয়ে যাবো। কিন্তু বিশে^র নামী দামী সব ডাক্তারই ব্যর্থ। এখানে কি তার কোটি ডলার কোন কাজে আসে নাই? প্রতিটি মানুষ যদি সৃষ্টির নিয়ামত সম্পর্কে উপলব্ধি করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে, হাতলে কি অসৎ পাথে পরিচালিত হাতে পারবে? না, কিছুতেই পারবে না, প্রতিটি মানুষ ‘যদি সে নিজেকে বাল ভাবে চিনে, হাহলে সমাজে অশান্তি দূর হয়ে যাবে।
অন্যের হাজার কোটি টাকা থাকুক না কেন? সে তো অসুস্থ্য। তার চেয়ে তো আমি সুস্থ্য। তার ঘরে একে অপরের মধ্যে আন্তরিকতা নেই। ঝগড়া লেগেই আছে। স্বার্থ নিয়ে বিরোধ। এখানে আমি আমার স্বজনদের নিয়ে আত্যন্ত হৃদ্যতা পূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে সাংসারিক জীবনে একে অপরের প্রতি, শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও সম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। প্রতিটি স্বার্থপর ও লোভী মানুষটি কে সমাজ ঘৃণা করে। স্বার্থপর মানুষটি সমাজকে কিছু দিতে যানে না। তার ধারনা থাকে, খাওয়া দাওয়া মান সম্মন ধন-সম্পদ ইত্যাদির মালিক কিন্তু সে ব্যতিত অন্যের কোন অধিকার নেই। প্রতিটি মুহুর্ত সে অশান্তির মধ্যে থাকে। কাহারও ভূসম্পত্তি বৈধ বা অবৈধ ভাবে আত্বসাৎ করতে চায়, অসৎ পথে প্রচুর টাকা কড়ির মালিক হতে চায়। শুধু চায় আর চায়। আর এ ধরনের স্বার্থপর মানুষকে সমাজ ঘৃনা করে। অডেল সম্পদের মালিক হয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভূলে গেলেন। স্বার্থের কারেণে ছেলে মেয়ে, স্ত্রী সহ পরিবারে কেহ কারো কথা শুনেনা। অশান্তি স্থায়ী রুপ ধারন করল। একে অপরের দেখা দেখি বন্ধ গেল। আর অশান্ত সম্পদ দিয়ে কি কোন কাজে লাভ হয়েছে? মোটেও না। যে যে অবস্থায় আছে , সে অবস্থায় থেকে সৃষ্টির শ্রেষ্টত্বকে স্বীকার করে কি শুকয়িা আদায় করতে পারে না? যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত সবই পালন করি। কিন্তু আমার পাশের বাড়ীর মানুষটি আমার চেয়ে ভাল সম্পদ ও সুস্থ্য থাকা স্বত্তেও এসর কিছুই পালন করে না। আবার গর্ভ করে বলে, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত এ সব কিছু পালন না করলেও শক্ত অবস্থানে থেকে দাবী করে সে কিন্তু খাটি ঈমানদার। বলুন তো বিকার গ্রস্থ মানুষ ছাড়া কি সে ঈমানের দাবী করেতে পারে? সৃষ্টি জগতের সকল স্বাদ গ্রহন করল।
অথচ সৃষ্টিকর্তা কে কি দিনে একটিবার স্মরন করেছে? বরং গর্ভ করে বলে থাকে , সৃষ্টিকর্তার দেখানো এবং শেখানো পথ পরবর্তীতে আদায় করবে।
তাহলে তার জানা আছে, যে কখন মৃত্যুবরন করবে। যেহেতু সৃষ্টির কেহ হায়াত মউত, রিজিক সম্পর্কে সে কিছুই জানে না, সেহেতু সে ভ্রান্ত নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে মুনাফিকের চরিত্র লালন ও পালন করিতেছে। ‘ঈমানদার’ কিন্তু প্রতিটি মুহুর্র্ত মৃত্যুর জন্য প্রস্তত। এখানে সন তারিখ করে ‘এবাদাত বন্দেগী’ করার সুযোগ নেই। সুতরাং যার যে ন্যায্য পাত্তনা বা হক আছে তা কিন্তু যথাসময়ে আদায় করে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। যেমন: হজ্ব পালনকারীরা দুনিয়ার জমিনে থাকা অবস্থায়ই সুস্থ্য মুস্তষ্কে কাপনের কাপড় নিজ হাতে পরিধান করে প্রেক্টিস করে। আল্লাহর দরবারে আরজ কারতে “লাব্বায়েক আল্লাহ হুম্মা লাব্বায়েক, লা-শরিকালাক” অর্থাৎ আমি হাজির……………।
মৃত্যু হয়ে গেলে তখন নিকট আত্মীয়রা কাপনের কাপড় পরিয়ে দাফন কাপনের ব্যবস্থা করে। স্বাস প্রস্বাস বাহির হওয়ার পর মৃত ব্যক্তির এবাদত বন্দেগির সুযোগ নেই। সময় থাকতে নিজ নিজের সমালোচনা করুন এবং আদর্শ গুনাবলি লালন পালন করুন (আমিন)।
লেখক, সভাপতি- সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।