Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি

admin

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ০৩:৩০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ০৩:৩০ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে দলটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পর গত রাতে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি গতকাল সোমবার রাতে বৈঠক করে বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনের ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দলটির স্থায়ী কমিটির গত রাতের ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রহসনের অংশীদার হতে চায় না বিএনপি। সে কারণে ৮ মে থেকে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান সম্পর্কে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অস্পষ্টতায় ছিলেন বিএনপির তৃণমূলের নেতারা। কারণ, বিএনপি নেতৃত্ব এত দিন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কমবেশি বিএনপির ৪৫ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে যাঁরা ভোটের মাঠে নেমেছেন, তাঁদের ব্যাপারে বিএনপি কতটা কঠোর হতে পারবে, এখন সেই আলোচনা সামনে এসেছে।

যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাদের যাঁরা প্রার্থী হচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশ্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হবে ২২ এপ্রিল।

এখানে উল্লেখ করা যায়, জামায়াতে ইসলামী প্রথমে উপজেলা নির্বাচন অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ঈদুল ফিতরের পরপরই দলটি তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে জানিয়ে দিয়েছে। এর আগেই জামায়াতের অন্তত ২২ জন নেতা প্রথম ধাপের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে দলটির নেতারা বলছেন।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারাও বলছেন, দলের যাঁরা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশনা পাঠানো হবে।

উপজেলার ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিএনপির যুক্তি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনও হবে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। তারা অংশ নিলে আওয়ামী লীগই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েছে দলটি।

Manual6 Ad Code

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আজ প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের দলের পুরোনো অবস্থান। তাঁরা সেই অবস্থানেই অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির যে ৪৫ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, এই সংখ্যাটা বেশি নয় বলেও মনে করছে বিএনপি। গয়েশ্বর রায় বলেন, তাঁরা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, তৃণমূলে কর্মীদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন করার আগ্রহ সেভাবে নেই।

Manual1 Ad Code

এমন বক্তব্যের ব্যাপারে যুক্তি হিসেবে গয়েশ্বর রায় বলেন, সরকারবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন ও ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তাঁদের লাখ লাখ নেতা–কর্মী মামলায় জর্জরিত। ২৭ হাজার বেশি কারাগারে গেছেন। ফলে তৃণমূলের কর্মীরা নতুন করে মামলা বা নির্যাতনের মুখোমুখি হতে চান না। এই পরিস্থিতি অগ্রাধিকার পেয়েছে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে।

Manual3 Ad Code

তবে যাঁরা ভোটের মাঠে নেমেছেন, তাঁদের তিনজনের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, শেষ মুহূর্তে দলের সিদ্ধান্ত তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাঁদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।

ঢাকার অদূরে গাজীপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ওই উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইজাদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন দল নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আমি গত দুই দিনে আমার উপজেলায় দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁদের আগ্রহের কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি।’

দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে ভোট করলে দল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে, সে ব্যাপারে ইজাদুর রহমানের বক্তব্যে মনে হয়েছে, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে চান।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছে, দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে নেতারা ঝুঁকি নিয়ে ভোট করবেন, এই সংখ্যা বেশি হবে না। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, দলের নির্দেশনার পরও নেতাদের যাঁরা ভোট করবেন, তাঁদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Manual1 Ad Code

কিন্তু বিএনপি আসলে কতটা কঠোর হতে পারবে—এই প্রশ্নে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, তাঁরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন।

শেয়ার করুন