Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঋণখেলাপির সংক্ষিপ্ত তালিকা

admin

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩ | ০৯:২৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ | ০৯:২৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ঋণখেলাপির সংক্ষিপ্ত তালিকা

Manual3 Ad Code

সম্পাদকীয় :
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে দেশের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মোট ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

Manual3 Ad Code

এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যেহেতু ঋণখেলাপিদের কারণে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতু মানুষ আশা করে ঋণখেলাপিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং খেলাপি ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষ আরও জোরালো পদক্ষেপ নেবে।

Manual1 Ad Code

দেশে ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা বিরাজ করছে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বস্তুত খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংক খাতে নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ঝুঁকি তৈরি করেছে। সামগ্রিক অর্থনীতির স্বার্থে এমন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি, যার মাধ্যমে ব্যাংকের ভালো গ্রাহকরা হবেন পুরস্কৃত এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা হবেন তিরস্কৃত ও দণ্ডিত।

Manual4 Ad Code

খেলাপি ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষ নানারকম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও বাস্তবতা হলো গত কয়েক দশকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু ব্যাংকারের সঙ্গে প্রভাবশালী ঋণখেলাপিদের যোগসাজশ রয়েছে। প্রশ্ন হলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি অব্যাহত থাকার পরও সংশ্লিষ্টরা কারসাজি করে পার পায় কী করে? খেলাপি ঋণ কেন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে এ রহস্য উদ্ঘাটনে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরা দরকার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে ক্ষমতা আছে, তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে। সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েও যে খেলাপি ঋণ আদায়ে অগ্রগতি লক্ষ করা যায় না, তা অতীতে বহুবার প্রমাণিত হয়েছি। কর্তৃপক্ষের শিথিল মনোভাবের কারণেই ঋণখেলাপিরা ঋণ পরিশোধে তৎপর হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংক খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। ঋণখেলাপিদের কারণে যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেন, তারাও নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। সম্প্রতি কৃষকদের ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষ যে মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে, বড় ঋণখেলাপিদের বিষয়ে তেমন মনোভাবের পরিচয় কেন দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশে ব্যাংক খাতের বড় এক সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি রোধে এ খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি। শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে এ খাতে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ কমে আসবে। এর পাশাপাশি ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সততা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। এ খাতের কোথাও কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়লে সব ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে নিতে হবে ব্যবস্থা। এটা স্পষ্ট যে, খেলাপি ঋণের বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এসব টাকা ফেরত আনতে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিকল্প নেই। বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই-ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শৈথিল্য প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ও কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সুখবর পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।

Manual5 Ad Code

শেয়ার করুন