Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিনব্রিজ দিয়ে আর চলবে না গাড়ি

admin

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
কিনব্রিজ দিয়ে আর চলবে না গাড়ি

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
চায়ের পর সর্বমহলে সিলেটকে উপস্থাপন করে যে স্থাপনা সেটি হল প্রায় ৯০ বছর পুরনো সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ। চলতি বছরের আগস্ট মাসে শুরু হয় এই ব্রিজের সংস্কার কাজ।

এই সংস্কার করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা বুঝতে পারেন যে এই সেতুটিকে আর যান চলাচলের উপযোগী করা যাবে না। তাই জন নিরাপত্তার স্বার্থে ও ঐতিহ্যবাহী এই কিনব্রিজকে টিকিয়ে রাখতে যান চলাচল বন্ধ রেখে শুধুমাত্র পায়ে হাঁটার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন।

Manual2 Ad Code

সওজ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারলে কিনব্রিজ হবে দেশের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পদচারী–সেতু। এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একই কারণে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ মিলে সংস্কার করে কিনব্রিজকে পদচারী-সেতুতে রূপান্তর করতে চেয়েছিল। কিন্তু এই ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের দাবীর মুখে ৫২ দিন পর আবারও যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ব্রিজটি। এরপর ২০২১ সালে ব্রিজটি আবার যান চলাচলের ঝুঁকির মুখে পড়ে। এজন্য সেবছর জুলাই মাসে ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে ব্রিজের প্রবেশ মুখে সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। রিকশা-ভ্যান-মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব ধরনের যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়।

 

Manual7 Ad Code

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, জরাজীর্ণ কিনব্রিজ সংস্কারের বিষয়ে ২০২০ সালে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়। সেখানে সেতু সংস্কারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দেন বিভাগীয় কমিশনার। পরবর্তীতে সওজের পক্ষ থেকে সেতুটি সংস্কারে মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় সওজ সিলেট অফিস। ওই বছরেরই জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। তবে নানা জটিলতায় কাটিয়ে অর্থ বরাদ্দের দুই বছরের অধিক সময় পর গত ১৭ আগস্ট থেকে এই সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করে রেল বিভাগ। শীঘ্রই এর সংস্কার কাজ শেষ করে পদচারী–সেতু হিসেবে জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে কিনব্রিজ।

সিলেট নগরীর বুক চিড়ে যাওয়া সুরমা নদীর উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের যোগাযোগ সুগম করতে ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হয় এই সেতু। ১৯৩৩ সালে নির্মাণ শুরু করা সেতুটির নির্মাণকাজ শেষে ১৯৩৬ সালে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয় কিনব্রিজ। ধীরে ধীরে সিলেটের পরিচিতির অংশ হয়ে উঠে এই কিনব্রিজ। বর্তমান পর্যটন নগরী সিলেটে পর্যটকদের প্রিয় একটি স্থান হল এই কিনব্রিজ। এই ব্রিজের পাশে দাঁড়িয়ে একটি ছবি তুলেই পর্যটকরা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে জানান দেন তারা সিলেটে এসেছেন। লোহা দিয়ে তৈরি এই কিনব্রিজের আকৃতি অনেকটা ধনুকের মতো বাঁকানো। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট।

সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, কিনব্রিজের সংস্কার কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সিলেটের জনসভার পরে একটি তারিখ নির্ধারণ করে আমরা ব্রিজটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেব। তবে এই ব্রিজটি শুধু পায়ে হেঁটে চলার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। কারণ এই ব্রিজটির সংস্কার করতে গিয়ে দেখা গেছে এটি আর যান চলাচলের উপযোগী করা যাবে না। এই ব্রিজ দিয়ে এখন যান চলাচল করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। তাই ঐতিহ্যবাহী এই ব্রিজকে টিকিয়ে রাখতে এবং জননিরাপত্তার স্বার্থে এই ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে।

Manual5 Ad Code

তিনি বলেন, এর আগেও ব্রিজকে টিকিয়ে রাখেতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে যান চলাচল বন্ধ রাখা হলেও নানা কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে এখন সবাইকে বুঝতে হবে। ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন যদি এই ব্রিজে কোনো দুর্ঘটনা হয় তখন এর দায়ভার আমাদেরকে নিতে হবে। তাই ব্রিজটি শুধুমাত্র পায়ে হাঁটার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এখন যদি জনগণের প্রয়োজন বেশি হয় তাহলে এই ব্রিজের পাশে আরেকটি ব্রিজের তৈরির প্রস্তাব করা যেতে পারে। কিন্তু কোনো ভাবেই জনসাধারণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা যাবে না।

Manual4 Ad Code

শেয়ার করুন