Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে

admin

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে

Manual3 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু হবে। একইসঙ্গে আবাসিক হলগুলো আগামী ২ মে খুলে দেওয়া হবে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সন্ধ্যা ৭টায় সভা শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। রাত ১১টা ৫ মিনিটে কুয়েটের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের পাবলিক রিলেশনস অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। শাহেদুজ্জামান শেখ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Manual1 Ad Code

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় আলোচ্যসূচির আলোকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সভায় উপস্থাপন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট গ্রহণ করে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

Manual7 Ad Code

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু হবে এবং সব আবাসিক হল আগামী ২ মে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

এর আগে রবিবার বিকালে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাত ৮টার মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। ওই দিন বিকাল ৫টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রশাসনের কাছে আবেদনের কপি তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের পক্ষে আবেদন গ্রহণ করেন ইইই অনুষদের ডিন রফিকুল ইসলাম। কিন্তু রবিবার রাত ৮টার মধ্যে খুলে না দেওয়ায় রাতভর সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। হল খুলে দেওয়ার দাবিতে কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এ অবস্থায় করণীয় নিয়ে সন্ধ্যায় প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়।

সভা চলাকালীন হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশ ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসে। এরপর সেখানেই আবার অবস্থান নেন তারা।

মিছিল শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিং করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, ‘দুপুরে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দফতরের সহকারী পরিচালক স্যারের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, সন্ধ্যা ৭টায় জরুরি ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত আসবে। আজ রাতেই হল খুলে দেওয়ার নোটিশ আসবে বলে আশা করছি। যেন আমরা আমাদের হলে আজকে সুন্দরভাবে রাতযাপন করতে পারি। আমরা চাই না আর খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে এখানে অবস্থান করতে। আমাদের হল আমাদের জন্য খুলে দিক।’

Manual4 Ad Code

এর ব্যত্যয় ঘটলে পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন বলে জানান। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা প্রশাসন কোনোভাবেই যেন দলীয় স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত না নেয়। তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দেবো।

এদিকে, প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বসে আছেন। সভায় হওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনও নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাননি তারা।

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটিও করা হয়েছে। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেছেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে খানজাহান আলী থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

Manual3 Ad Code

শেয়ার করুন