Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি নেতাদের প্রাধান্য কী বার্তা দিচ্ছে

admin

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি নেতাদের প্রাধান্য কী বার্তা দিচ্ছে

Manual5 Ad Code

অনলাইন ডেস্ক:
প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার এ সময়ে রাষ্ট্র, সরকার, আইন সবকিছুই যেন প্রযুক্তিকেন্দ্রিক। উন্নত দেশগুলোও তাই প্রযুক্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন সবকিছুর আগে। মোড়ল রাষ্ট্র আমেরিকাও ব্যতিক্রম নয়। প্রযুক্তি খাতের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ও প্রাধান্যের স্পষ্ট উদাহরণ দেখা গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানেও। ইলন মাস্ক, সুন্দর পিচাই, মার্ক জাকারবার্গ এবং জেফ বেজোসের মতো প্রযুক্তি খাতের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সামনের সারিতে আসন দেওয়ার মাধ্যমে সেটা আবারও প্রমাণিত হলো।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান, উবারের দারা খোসরোশাহি এবং টিকটকের শাউ জি চিউয়ের উপস্থিতি প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকটি তুলে ধরে।

যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেক আয়োজনে প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি এবং আসনবিন্যাস নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত সদস্যদের সামনের সারিতে বসানো হয়েছিল স্পেসএক্স ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ এবং আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসকে। সমালোচকরা এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রে অলিগার্কি বা অল্প কিছু মানুষের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার প্রতীক হিসাবে দেখছেন। এটি গণতন্ত্রের ওপর প্রযুক্তি খাতের নেতাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকেই ইঙ্গিত করে বলে মনে করছেন অনেকে।

Manual8 Ad Code

যেমন ছিল আসনবিন্যাস
প্রথমে ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের বাইরে খোলা আকাশের নিচে অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। সেখানে সম্মানীয় অতিথিদের জন্য বেদি নির্ধারিত ছিল। তবে তীব্র শীতের কারণে অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটালের ভেতরে স্থানান্তরিত হয়। ফলে আসনবিন্যাসে পরিবর্তন আনা হয়, যা প্রযুক্তি নেতাদের ট্রাম্প পরিবারের সদস্যদের পাশেই এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের সামনের সারিতে বসার সুযোগ করে দেয়। এ পরিবর্তন ঘিরেই মূলত সমালোচনার সূত্রপাত।

প্রযুক্তি নেতাদের ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিকটকের সিইও শাউ জি চিউ, ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান এবং উবারের সিইও দারা খোসরোশাহি। তাদের সঙ্গে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস, পডকাস্টার জো রোগান এবং ফক্স করপোরেশনের চেয়ার ইমেরিটাস রুপার্ট মুরডকও ছিলেন। তবে এদের আসন তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বরাদ্দ করা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি খাতের নেতাদের প্রতি প্রাধান্য শুধু তার প্রশাসনের পছন্দ নয়, এটি একটি পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক ধারার সূচনাকেও ইঙ্গিত দেয়।

Manual6 Ad Code

গণতন্ত্রের জন্য সংকট?
মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত সদস্যদের চেয়েও সম্মানের আসনে প্রযুক্তি নেতাদের বসানো নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, ‘বড় প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ারদের সামনের সারিতে বসানো আমাদের গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।’ ডেমোক্রেটিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে এ ধরনের সম্পর্ক একটি নতুন ধরনের অলিগার্কি তৈরি করছে, যা গণতন্ত্রের ভারসাম্যকে বিপন্ন করতে পারে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে ধনকুবেরদের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তার মতে, এ কেন্দ্রীয়করণ ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। অন্যদিকে ট্রাম্পের সাবেক প্রধান কৌশলবিদ স্টিভ ব্যানন এ ঘটনাকে ‘প্রযুক্তি নেতাদের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ ঘটনাকে ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে জাপানের আত্মসমর্পণের সঙ্গে তুলনা করেন।

Manual7 Ad Code

করপোরেট প্রভাবের ইঙ্গিত
রোটুন্ডায় আসন সংকটের কারণে কংগ্রেস সদস্যদের পরিবারের অনেকেই প্রবেশ করতে পারেননি। অথচ অনুষ্ঠানে প্রথম দিকের সারিতে বসে ছিলেন জেফ বেজোসের বাগ্দত্তা লরেন স্যাঞ্চেজ। এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করে কড়া সমালোচনা করেন ডেমোক্রেটিক মিডিয়া বিশ্লেষক রন ফিলিপকোস্কি। তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছিল তবে অলিগার্কদের জন্য নিয়ম আলাদা।’ অনেকেই মনে করেন, প্রযুক্তি খাতের নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে করপোরেট প্রভাবের একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতেও প্রযুক্তি খাতের ক্ষমতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়।

Manual7 Ad Code

শেয়ার করুন